বিয়ের নামে বহু পুরুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ-সম্পদ লুট, প্রতারণা-জালিয়াতিসহ হয়রানির বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে পুঠিয়া উপজেলার বহুল আলোচিত নারী ফারিয়া ইসলাম হিয়া ওরফে ডানার বিরুদ্ধে। তার ফাঁদে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন একাধিক পুরুষ।
তার প্রতারণা ও জালিয়াতিসহ অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরে তাকে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাবেক চার স্বামী।
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার গোন্ডগোহালী এলাকার মোঃ হাসিবুল ইসলামের মেয়ে ফারিয়া ইসলাম হিয়া ওরফে ডানা। এ পর্যন্ত বিয়ে করেছে ৫টি। বিয়ে করে কিছুদিন পর সেই স্বামীকে ছেড়ে দেওয়া এবং তার কাছ থেকে দেনমোহরের টাকাসহ নানা কৌশলে বাড়ি-গাড়ি হাতিয়ে নেওয়াই তার ব্যবসা। তার মূল টার্গেট সম্পদশালী ব্যবসায়ী, উচ্চপদস্থ চাকরিজীবী ও প্রবাসীরা। প্রথমে টার্গেট নিশ্চিত করে তিনি ধীরে ধীরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে নিজ দেহের সৌন্দর্য ও কথা মালার মারপ্যাঁচে আটকে ফেলেন টার্গেটকৃত পুরুষদের।
জানাযায়, ২০১১ সালে ফারিয়া ইসলাম হিয়া প্রথমে বিয়ে করেন পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়া এলাকার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ প্রিন্স কে। কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামীর ঘর থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার নিয়ে বেরিয়ে যায় তিনি। তার উশৃঙ্খল জীবনযাপন ও মালপত্র চুরির ঘটনায় বিচ্ছেদ ঘটে সেই সংসারে।
ফারিয়া ইসলাম হিয়ার দ্বিতীয় বিয়ে হয় ২০১৩ সালে নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার চাকরিজীবী জুবায়ের আহমেদের সঙ্গে। তখন প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নিজেকে ‘কুমারী’ দাবি করে জুবায়ের আহমেদের সঙ্গে ৩ লাখ টাকা কাবিননামায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। কিন্তু বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে ফারিয়া ইসলাম হিয়ার উগ্র আচরণের শিকার হন স্বামী জুবায়ের। একপর্যায়ে নগদ অর্থ নিয়ে বাড়ি থেকেও বেরিয়ে যান ফারিয়া। এ ঘটনায় একই বছরের ডিসেম্বরে জুবায়ের আহমেদ তাকে তালাক দেন। একই বছরে প্রেমের সম্পর্ক করে ১লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে কোর্ট ম্যারেজ করেন রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার মাটিকাটা এলাকার মোঃ শফিকুল ইসলাম সুমনের সাথে। বহু পুরুষে আসক্তের অভিযোগে ২০১৫ সালের মার্চ মাসে ভেঙে যায় সেই সংসার।
ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফারিয়া ইসলাম হিয়া প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আবারও নিজেকে ‘কুমারী’ দাবি করে নিজের রুপ সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ২০১৬ সালে ৩ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন নাটোর লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া এলাকার মোঃ বাসারুল ইসলামকে। কিন্তু কথায় আছে কুকুরের লেজ নাকি ঘি দিলেও সোজা হয় না। নিজের স্বার্থ হাসিল করে ২০২১ সালে বাসারুল কে ডিভোর্স করে ফারিয়া বিয়ে করেন নাটোর সিংড়া উপজেলার ধনাঢ্য ব্যক্তি রাইসুল ইসলাম বাবু কে।
এভাবে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করে কিছুদিন অতিবাহিত করার পর তাদের প্রতি জুলুম, নির্যাতন, অত্যাচার, মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, তার এ সকল অপকর্মে তাকে সহযোগিতা করে স্বয়ং তার বাবা, মা এবং এলাকার নিকাহ্ রেজিস্টার মাহদী ইসলাম। বিয়ের পর অত্যন্ত সুকৌশলে দেনমোহরের টাকা আদায় করা সহ বিয়ের কাবিননামায় টাকার অংক পরিবর্তন করে মোটা অংকের টাকা বসিয়ে দেন তিনি।
এ বিষয়ে ফারিয়া ইসলাম হিয়ার সাথে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ না নিলে তিনি এভাবে একের পর এক বহু পুরুষকে ফাঁদে ফেলে তাদের অর্থ-সম্পদ লুটে নেবে। অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তার পূর্বক তার সব অপকর্ম তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি করেন ভুক্তভোগী সাবেক ৪ স্বামী।