ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪ |

EN

আতিকুল ইসলাম বলেন, 'নগরের উন্নয়নে জনগণের সহযোগিতার বিকল্প নেই।

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: বুধবার, নভেম্বর ২, ২০২২

আতিকুল ইসলাম বলেন, 'নগরের উন্নয়নে জনগণের সহযোগিতার বিকল্প নেই।
নাগরবাসীর সুযোগ-সুবিধা ও সমস্যার কথা সরাসরি জানতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পরিদর্শন ও স্থানীয় জনগণকে নিয়ে মতবিনিময় সভা শুরু করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। 

বুধবার (০২ নভেম্বর ২০২২) সকালে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম ১৩নং ওয়ার্ডের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, 'নির্বাচনের সময় প্রতি ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চেয়েছিলাম। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে উত্তর সিটির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। জনগণের সুযোগ-সুবিধা ও সমস্যার কথা শোনার জন্য আমি প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভা শুরু করেছি। জনগণের কাছে গিয়ে তাদের সমস্যার কথা সরাসরি শোনার জন্যই আমি এসেছি। জনগণের দাবি পূরণ করে সুন্দর নগর গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য।'

কাউন্সিলররা স্ব স্ব ওয়ার্ডে ঘুরে সমস্যা চিহ্নিত করবে ও ব্যবস্থা নিবে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, 'জনগণকে সম্পৃক্ত করে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে কাউন্সিলররা জনগণের কাছে যাবে। ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের ব্যবস্থা নিবে। কাউন্সিলরদের মাঠে থাকতে হবে। জনগণের সাথে সংযোগ রক্ষা করতে হবে। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এলাকায় এমন কিছু সমস্যা থাকে যেগুলো তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলে সমস্যাগুলোর সমাধান সহজ হয়।'

ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, 'মেট্রোরেল চালু হলে ১৩নং ওয়ার্ড এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উপর দিয়ে মেট্রোরেল তৈরি করে দিয়েছেন। এখন নিচের রাস্তাগুলো করে পশস্ত করে মেট্রোরেলের সাথে কানেক্টিভিটি তৈরি করে দিব। আইসিএম (ইন্টিগ্রেটেড করিডর ম্যানেজমেন্ট) প্রকল্পের আওতায় এই কাজগুলো সম্পন্ন করা হবে।'

এসময় রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য নগরবাসীকে প্রয়োজনীয় জায়গা ছেড়ে দেয়ার  আহবান করেন ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। 

আতিকুল ইসলাম বলেন, 'নগরের উন্নয়নে জনগণের সহযোগিতার বিকল্প নেই। জনগণ ঠিকমতো নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করলে উন্নয়ন কাজ করার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ট্যাক্স পরিশোধ করতে এখন আর সিটি কর্পোরেশনে যেতে হয় না। অনলাইনে ঘরে বসে ট্যাক্স দিন। জবাবদিহিতার মাধ্যমে আমরা নাগরিক সেবা পৌছে দিতে অনলাইনে কার্যক্রম পরিচালনা করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্সও প্রদান করা হবে।'

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, 'ড্রেন বা নর্দমার পানিতে কিন্তু এডিস মশার জন্ম হয় না। জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতেই এডিসের লার্ভা জন্মায়। নিজেদের বাসাবাড়িতে ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। জমে থাকা স্বচ্ছ পানি ফেলে দিন। জনগণের আন্তরিক সহযোগিতায় গত ঈদে মাত্র ১২ঘন্টায় কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছি। অতএব জনগণ সহযোগিতা করলেই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।'

আতিকুল ইসলাম বলেন, 'বাসা-বাড়ির পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ ড্রেনে বা খালে দেয়া যাবে না। নিজেদের বাসা বাড়িতে নিজস্ব ব্যবস্থায় পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। খালগুলোকে বাঁচাতে হবে। জলাশয়গুলোকে বাঁচাতে হবে।'

এসময় স্থানীয় জনগণ মেয়রের কাছে তাদের বিভিন্ন  দাবিগুলো তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীরা মাঠের দাবি জানালে মেয়র বলেন, 'এই এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব জমি নেই খেলার মাঠ নির্মাণের জন্য। আমরা বিভিন্ন সংস্থার কাছে জমি চেয়েছি। তারা যদি হস্তান্তর করে তাহলে আমরা খেলার মাঠ নির্মাণ করে দিব। বিভিন্ন এলাকায় খাস জমি রয়েছে। অনেক খাস জমি বেদখল হয়ে গেছে। এগুলো খুঁজে বের করে খেলার মাঠ নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

সভায় বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি মেয়র মাসব্যাপী মশা নিধন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ট্রাকে উঠে নিজে মাইকিং করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন করেন। মনিপুর এলাকার কয়েকটি রাস্তায় ঘুরে ঘুরে জনগণের সাথে কথা বলেন এবং ডেঙ্গু সচেতনতা বিষয়ক লিফলেট বিতরণ করেন। 

পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ওয়ার্ড পরিদর্শন করবেন এবং মতবিনিময় সভায় অংশ নিবেন বলেও জানান মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।  

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেঃ জেনাঃ মোঃ জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহঃ আমিরুল ইসলাম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ মাহে আলম, ১৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ ইসমাইল মোল্লা, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবেদ আলী এবং স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।