নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: রবিবার, অক্টোবর ৩, ২০২১
সুনামগঞ্জের
দোয়ারাবাজারে চিকিৎসা সেবা চাওয়ায় রোগীর
এক স্বজনকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. সিফাত আরা
সামরিনের বিরুদ্ধে।
ঘটনা
সূত্রে জানা যায়, শনিবার
ভোর ৫টায় উপজেলার সুরমা
ইউনিয়নের টেংরাটিলা (আজবপুর) গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল
মজিদ বীরপ্রতীক মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর খবর পেয়ে জ্ঞান
হারান তার বড় ছেলে
মেজবাউল গণি সুমন। এ
অবস্থায় তাকে সকাল সাড়ে
৯টার দিকে নিয়ে যাওয়া
হয় দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
এ
সময় জরুরি বিভাগে কোনো ডাক্তার না
পেয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সিফাত আরা
সামরিনের কোয়ার্টারে নিয়ে যাওয়া হয়
রোগীকে। এ সময় সেবার
বদলে উল্টো রোগী ও রোগীর
স্বজনদের তিরস্কার করে বের করে
দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে জরুরি বিভাগের
উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. হাসান মাহমুদের
কাছে সেবা নেন তারা।
রোগীর
স্বজন সদ্য প্রয়াত বীর
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ বীরপ্রতীকের ভাগ্নি
শাহানা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সামরিন ম্যাডামের বাসায় গিয়ে বললাম হাসপাতালে
কোনো ডাক্তার নাই, আমি বীরপ্রতীক
আব্দুল মজিদের বড় ছেলেকে নিয়ে
এসেছি, উনার অবস্থা খুব
খারাপ, এই মুহূর্তে একটু
ট্রিটমেন্টের দরকার।
কথা
শুনে ডাক্তার সিফাত আরা সামরিন আমাকে
বলেন, বেরিয়ে যা, বেরিয়ে যা,
এখানে কেন আসছিস? আমি
বীরপ্রতীককে চিনি না।
এ
সময় রুমে থাকা এক
নারীকে তিনি বলেন, ওরে
ঘাড় ধইরা বের কইরা
দরজা দিয়ে দে, অফিস
টাইম এখন না, বেরিয়ে
যা, বেরিয়ে যা।
শাহানা
আক্তার বলেন, এই ডাক্তারের খারাপ
আচরণের সুষ্ঠু বিচার চাই আমি। এখানে
ডাক্তাররা যেভাবে অবহেলা করে তা বলার
মতো না।
রোগী
মেজবাউল গণি বলেন, আমার
আব্বা মারা যাওয়ার খবর
শুনে আমি অসুস্থ হয়ে
পড়লে ডাক্তারের শরণাপন্ন হই। ডাক্তার আমার
ফুফাতো বোনের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে তাকে
ঘর থেকে বের করে
দিতে আয়াকে নির্দেশ দেয়। তাই ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তাদের প্রতি আমার অনুরোধ, রোগীরা
যাতে কোনো ডাক্তারের কাছ
থেকে যেন এরকম কোনো
ব্যবহার না পায়।
এ
বিষয়ে জানতে চাইলে আরএমও ডা. সিফাত আরা
সামরিন যুগান্তরকে বলেন, আমি ৭ দিনের
ছুটিতে আছি। আমার বাসার
হাউজ কিপারকে নির্দেশ দেওয়া আছে বাসায় যাতে
কাউকে ঢুকতে না দেওয়া হয়।
সকালে আমার বেডরুমে একজন
ঢুকে পড়লে আমি আমার
হাউজ কিপারকে একটু বকাঝকা করেছি।
রোগীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করিনি।
উপজেলা
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সফর
আলী বলেন, চিকিৎসা সেবা চাইতে গিয়ে
ডাক্তার কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা সন্তান লাঞ্ছিত হবার খবর শুনে
মর্মাহত হয়েছি। আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে
সাড়া দিয়ে জীবন বাজি
রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন
করেছি। এই দেশে আমাদের
সন্তানরা অযথা লাঞ্ছিত হবে
তা হতে দেব না।
প্রয়োজনে সব মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে
আবার মাঠে নামব।
যোগাযোগ
করা হলে সিভিল সার্জন
ডা. শামস উদ্দিন বলেন,
বিষয়টি ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা
নিচ্ছি।