নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: রবিবার, অক্টোবর ৩, ২০২১
নিজের
কিশোরী মেয়েকে দীর্ঘ দিন যৌন নির্যাতনের অভিযোগে সিরাজুল ইসলাম রতন (৫০) নামের এক পাষণ্ড
বাবার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
লক্ষ্মীপুরের
সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের রাজারামঘোষ গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। সিরাজুল ইসলাম রতন
উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি।
শনিবার
(২ অক্টোবর) সকালে ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। মামলাটির তদন্তকারী
কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মোঃ বেলায়েত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান,
শুক্রবার (১ অক্টোবর) ভিকটিম কিশোরীর মামা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন
দমন আইনে চন্দ্রগঞ্জ থানায় সিরাজুল ইসলাম রতনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
তবে
স্থানীয় ভাবে জানা যায়, ঘটনা জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম
রতন, ভিকটিম ও ঘটনার বর্ণনাকারীদেরকে চন্দ্রগঞ্জ থানায় নিয়ে পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ
করে।
অন্যদিকে
এ ঘটনায় পাষণ্ড বাবার বিচার চেয়ে শুক্রবার বিকালে স্থানীয় হানিফ মিয়াজীরহাট এলাকায়
মানববন্ধন করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। মানববন্ধনে সিরাজুল ইসলাম রতনের ফাঁসির দাবি
করে ঘটনার বর্ণনাকারী ও ভিকটিমের নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি করেন বক্তারা।
মামলার
এজাহার ও বাদী সাইফুল ইসলাম জানায়, সিরাজুল ইসলাম রতনের প্রথম স্ত্রী জোলেখা বেগম
(৪০) নিজের মেয়েকে যৌন নির্যাতন (ধর্ষণ) সহ স্বামীর বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করে
আসছিলেন। এতে রতন তার স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। পরে ২০২০ সালের
এপ্রিল মাসে তার স্ত্রী জোলেখা বেগম বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে আমরা জানি। প্রথম
স্ত্রী মৃত্যুর কয়েক দিন পর রতন ফাতেমা বেগম নামের এক নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
দ্বিতীয়
বিয়ে করার পরও নিজের কিশোরী কন্যার প্রতি তার লোলুপ দৃষ্টি আরো বেড়ে যায় এবং একাধিকবার
মেয়েকে জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে যৌন নির্যাতন করে পাষণ্ড ওই পিতা। বিষয়টি দ্বিতীয় স্ত্রী
জানার পর শুরুতে তিনিও প্রতিবাদ করেন।
নাম
প্রকাশ না করা সত্ত্বে স্থানীয় কয়েকজন প্রতিবেশী জানায়, পাষণ্ড বাবার লোলুপ দৃষ্টি
থেকে বাঁচতে ভিকটিম তাঁর বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার কাছে ঘটনাটি খুলে বলে। পরে ওই শিক্ষিকা
ভিকটিমের মা কে বিষয়টি অবহিত করলে রতন ওই শিক্ষিকার উপর চড়া হয়। নানা হুমকি ধমকি দিতে
থাকে ওই শিক্ষিকাকে। এরই মাঝে বিচার চেয়ে ওই কিশোরীর একটি অডিও বক্তব্য ফেসবুক মেসেঞ্জার,
হোয়াটসঅ্যাপস সহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানাজানি হয়। তখনই পুলিশ তৎপর হয়ে রতন ও কিশোরীকে
থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
আটকে
আগে সিরাজুল ইসলাম রতন সাংবাদিকদের জানান, কয়েকদিন যাবত তার বিরুদ্ধে অভিযোগটি তিনি শুনেছিলেন।
চন্দ্রগঞ্জ
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একে ফজলুল হক জানান, অভিযুক্ত রতন বিরুদ্ধে মামলা দায়েরর
পর তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।