ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, অক্টোবর ২, ২০২১
হজের
জন্য কষ্টে জমানো মায়ের সাড়ে ৬ লাখ
টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে
মেয়ে। তার নাম কাজী
দিলখুশ জান্নাত নিসা। সে মিরপুর গার্লস
আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইন্সটিটিউটের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি
ঘটেছে রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকায়। মেয়ে
উধাও হওয়ার ঘটনায় নিসার মা মাহমুদা আক্তার
ওই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের
করেছেন। যেটি এখন তদন্তাধীন
রয়েছে। এর নেপথ্যে জড়িত
থাকার সন্দেহে তরিকুল নামের এক ছেলেকে আটক
করেছে পুলিশ।
এ
বিষয়ে আজ শনিবার (২
অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি)
আ স ম মাহাতাব
উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় প্রাথমিক
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা একজনকে
আটক করেছি। তার কাছ থেকে
অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। সময়
হলে সব কিছুই জানানো
হবে।
মায়ের
হজ্বের টাকা নিয়ে পালিয়ে
যাওয়া মেয়েটির সঙ্গে তার আরও দুই
বান্ধবী পালিয়ে গেছে বলে জানান
ডিসি। তারা হলেন, কানিজ
ফাতেমা ও স্নেহা আক্তার।
উল্লেখ্য,
রাজধানীর পল্লবীতে ৩ কলেজছাত্রী নিখোঁজ
হয়েছে বলে গতকাল শুক্রবার
(১ অক্টোবর) অভিযোগ পায় পুলিশ। এরপর
ঘটনার তদন্তে মাঠে নামে পল্লবী
থানার পুলিশ।
অভিযোগ
থেকে জানা যায়, নিখোঁজ
ওই ৩ বান্ধবী তাদের
নিজ নিজ বাসা থেকে
নগদ টাকা, স্বর্ণের গহনা, স্কুল সার্টিফিকেট ও মূল্যবান সামগ্রী
নিয়ে পালিয়ে যায়। তারা এইচএসসি
দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, বিদেশে নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের প্রলোভিত করেছে একটি নারী পাচারকারী
চক্র। এজন্য তারা বাসা থেকে
মূল্যবান জিনিসগুলো চুরি করে পালিয়েছে।
গতকাল
শুক্রবার পল্লবী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পারভেজ ইসলাম
জানান, ৩ জন নিখোঁজ
হয়েছে এমন একটি অভিযোগ
এসেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের
জন্য একজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। এখন
পর্যন্ত বলার মতো কোন
অগ্রগতি নেই।
নিখোঁজ
পরিবার অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার পল্লবীর ১১ নম্বর প্যারিস
রোডের ‘সি’ ব্লক ১৮
নম্বর লাইনে ঘটনাটি ঘটে। নিখোঁজ ৩
জনের মধ্যে দিলখুশ জান্নাত নিসা মিরপুর গার্লস
আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইন্সটিটিউট, স্নেহা পল্লবী ডিগ্রি কলেজ ও কানিজ
ফাতেমা দুয়ারিপাড়া কলেজের শিক্ষার্থী। নিখোঁজ ছাত্রীর নিসার মা মাহমুদা আক্তার
লিখিত অভিযোগে ৩ জনকে আসামি
করেছেন। তারা হচ্ছে- তরিকুল,
রকিবুল ও জিনিয়া। এরমধ্যে
জিনিয়া টিকটকে পরিচিত মুখ। আর তরিকুল
ও রকিবুল সহোদর।
অভিযোগে
মাহমুদা জানান, তার মেয়ে নিসা
ও মেয়ের দুই বান্ধবী কানিজ
ফাতেমা ও স্নেহাকে বিদেশে
নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘর ছাড়া করেছে
একটি নারী পাচারকারী চক্র।
পরিবারের কাউকে কিছু না বলে
গত বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল
৯টায় সবাই নিজ নিজ
বাসা থেকে একসঙ্গে বের
হয়। বের হওয়ার সময়
প্রত্যেকে বাসা থেকে কয়েক
লাখ টাকা, গহনা, স্কুল সার্টিফিকেট ও দামি মোবাইল
ফোন সেট নিয়ে গেছে।
নিখোঁজ
শিক্ষার্থী দিলখুশ জান্নাত নিসার বড় বোন অ্যাডভোকেট
কাজী রওশন দিল আফরোজ
জানান, আমার বোন ও
তার বান্ধবীদের বিদেশে নেয়ার প্রলোভন দেখানো হয়েছে। এজন্য তারা বাড়ি ছেড়ে
পালিয়েছে।
তিনি
আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকালে সবাই কলেজ ড্রেস
পরে বের হয়েছে। কলেজের
ব্যাগ ছিল সঙ্গে। আমাদের
মহল্লার প্রতিবেশী তরিকুল, রকিবুল ও জিনিয়া এ
ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে তরিকুল
আমার বোনের সঙ্গে প্রায়ই কথা বলতো। তরিকুল
তাকে (নিসা) বলতেন, সে অনেক বড়
হ্যাকার। আর অনেক বড়
কোম্পানির মালিক। আমেরিকা লোক পাঠায়। আমার
বোন নিসা বাসায় এসে
আমাকে বলেছে, আপু তরিকুল তোমাকে
তার কোম্পানির লিগ্যাল অ্যাডভাইজার পদে চাকরি দেবে।
তিনি জানান, ঘটনার পর আমরা তরিকুলের বাসায় গিয়ে জানতে পারি- সে ও তার বড় ভাই রকিবুল বৃহস্পতিবার থেকেই বাসায় নেই। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ। জিনিয়া নামে তরিকুলের এক টিকটক বান্ধবী রয়েছে। জিনিয়া আমার ছোট বোন ও তার বান্ধবীদেরও পরিচিত। জিনিয়ার বাসায়ও গিয়েছি ওদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে। কিন্তু জিনিয়া দেখা করেনি আর তার পরিবারের সদস্যরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। আমরা মনে করছি তরিকুল ও জিনিয়ার পরিবার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারা জানে, আমার বোন ও তার বান্ধবীরা কোথায় আছে।