জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: শনিবার, অক্টোবর ২, ২০২১
ঢাকা
থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনের মাঝখানের একটি বগিতে পাথর
ছুড়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এতে নরসিংদীর দুজনসহ ট্রেনটির অন্তত চার যাত্রী আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (০১ অক্টোবর) রাত পৌনে ১০টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গী রেলস্টেশনে পৌঁছার আগমুহূর্তে
এ ঘটনা ঘটে।
আহত
নরসিংদীর দুজন হলেন, সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের টাওয়াদী এলাকার দেলোয়ার মিয়ার ছেলে
কবির মিয়া (৩৮) ও করিমপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের হাসান আলীর ছেলে শুক্কুর আলী (৩২)।
এই ঘটনায় আহত অন্য দুজনের নাম-পরিচয় জানা না গেলেও তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বলে
ট্রেনটির যাত্রীরা জানান।
আহত
দু'জন ও তাদের স্বজনরা জানিয়েছেন, উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাজধানী ঢাকার কমলাপুর থেকে
রাত ৮টা ৩০ মিনিটে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ট্রেনটি পৌনে ১০টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গী
স্টেশনে পৌঁছায়। ট্রেনটি ওই স্টেশনে প্রবেশ করার আগমুহূর্তে মাঝখানের একটি বগিতে পরপর
বেশ কিছু ঢিল ছোড়া হয়। দুর্বৃত্তরা ঢিল হিসেবে স্লিপারে থাকা পাথর ব্যবহার করে। এতে
বগিটির ভেতরে অবস্থান করা চারজন যাত্রী আহত হয়েছেন।
এই
ঘটনায় নরসিংদীর দুই যাত্রী কবির মিয়া ও শুক্কুর আলী চোখের নিচে গালের ওপরের অংশে রক্তাক্ত
জখম হন। প্রায় তিরিশ মিনিট পর ট্রেনটি নরসিংদী স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিলে আহতদের স্বজন
ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালটির জরুরি
বিভাগে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহত বাকি দু'জন ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেবেন বলে বগিটির অন্য যাত্রীদের জানিয়েছেন।
দুর্ঘটনার
সময় আহত শুক্কুর আলীর সহযাত্রী ছিলেন তার বড়ভাই রহমত উল্লাহ। তিনি বলেন, আমরা বেনারসি
শাড়ির কারিগর। আমরা ৫ জন মিলে তৈরি করা কিছু শাড়ি রাজধানীর মিরপুরে বিক্রির পর ওই ট্রেনে
করে বাড়ি ফিরছিলাম। টঙ্গী স্টেশনে ঢোকার আগমুহূর্তে চলন্ত ট্রেনে আমরা যখন নিজেদের
মধ্যে কথা বলছিলাম, ওই মুহূর্তেই ঢিল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এতে আমার ছোটভাইসহ মোট চারজন
রক্তাক্ত জখম হন। ঢিল ছোড়া পাথর দুজনের চোখের সামান্য নিচে লাগে। একজনের হাতে ও অন্যজনের
মাথায় এসে লাগে।
নরসিংদী
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নাদিরুল আমিন বলেন, ট্রেন ভ্রমণকালে
দুর্বৃত্তদের ছোড়া পাথরের আঘাতে আহত দুইজনকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের মধ্যে একজনের
ডানপাশের গালের ওপরের অংশে ও অন্যজনের বামপাশের গালের ওপরের অংশে রক্তাক্ত জখম হয়েছে।
অল্পের জন্য তাদের চোখ রক্ষা পেয়েছে। দুজনের অবস্থাই আশঙ্কামুক্ত হওয়ায় তাদের ছেড়ে
দেওয়া হয়েছে।
নরসিংদী
রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. ইমায়েদুল জাহেদী বলেন,
আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারার ঘটনায় কয়েকজন আহত হওয়ার খবর শুনেছি।
চলন্ত ট্রেনে ঢিল ছুড়ে মারা ঘটনা খুবই দুঃখজনক। টঙ্গী স্টেশন ও এর আশপাশে প্রায়ই চলন্ত
ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারার ঘটনা ঘটছে। এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সবার সচেতন হওয়ার
বিকল্প নেই।