২৬ অক্টোবর গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি) আত্মপ্রকাশের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামীকাল বুধবার। গত বছর এই দিনে দলটি রাজধানীর পল্টনের প্রিতম-জামান টাওয়ারস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে আত্মপ্রকাশ হয়েছিলো।
আত্মপ্রকাশের সময়ই ‘জনতার অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার’ -এ স্লোগানকে ধারণ করে গণমানুষের জন্য রাজনীতি করার ঘোষণা দিয়েছিলো 'গণঅধিকার পরিষদ'। "গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, অধিকার, জাতীয়স্বার্থ " দলের মূলণীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ৪ মূলনীতির সঙ্গে ঘোষণা করা হয় দলের ২১ দফা কর্মসূচিও। যেখানে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান,স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও সার্বজনীন মানবাধিকার সুরক্ষাসহ জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে পররাষ্ট্রনীতি, শিক্ষাকে যুগোপযোগী করাসহ বেকারত্ব নিরসনে কর্মমুখী শিক্ষা ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষির আধুনিকায়ন, সকলের জন্য স্বাস্থ্যবীমা নিশ্চিত করে আগামীর বৈষম্যহীন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের কথা বলা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১ বছরের মধ্যেই নানা কর্মসূচি ও সাংগঠনিক তৎপরতার মাধ্যমে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত হয়ে উঠেছে নবীন এ দলটি। শুরুতেই অর্থনীতিবিদ ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়াকে দলের আহ্বায়ক হিসেবে যুক্ত করে আলোচনায় আসে দলটি।
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ ঢাকা টাইমসকে বলেন, এক বছরের মধ্যেই সারা দেশে সংগঠনটিতে অন্যান্য দলের রাজনীতিক থেকে শুরু করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, জনপ্রতিনিধি, সাবেক সেনা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সমন্বয় ঘটানোর চেষ্টা করেছে।
দলের সংগঠনিক কাঠামোতেও দৃশ্যমাণ অগ্রগতি সাধন করে দলটিকে তৃণমূলে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছে এদলটি। এরই মধ্যে গঠন করা লিখিত গঠনতন্ত্র। দেশের ৪৪টি জেলা কমিটি ও ১৫০ টির মতো উপজেলা কমিটি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন দল নিবন্ধনে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া শর্তের পূরণে এরই মধ্যে প্রত্যেক উপজেলায় ২০০ জনেরও বেশি ভোটারকে দলের প্রাথমিক সদস্য হিসেবে অন্তভুক্ত করেছে।
দলটির সদস্য সচিব ও সাংগঠনিক মুখপাত্র নুরুল হক নুর এ প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থায় গণতান্ত্রিক রাজনীতি করা একটা দূরূহ বিষয় হয়ে উঠছে। সরকারি দলের লাঠিয়াল বাহিনী ও সন্ত্রাসীদের রক্তচক্ষু, প্রশাসনের দলান্ধ ব্যক্তিদের হুমকি-ধমকি, হামলা-মামলার মধ্যেও আমরা সাহসী তরুণদের নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। ১ বছরের মধ্যেই আমরা ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত সংগঠনকে পৌঁছে দিতে পেরেছি। এটি আমাদের বড় একটি সফলতা। বিদ্যমান দুঃশাসন ও দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির বিপরীতে গণঅধিকার পরিষদ একটি সহনশীল গণতন্ত্র ও সামাজিক সম্প্রীতির ইতিবাচক রাজনীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। যা মানুষের কাছেও গ্রহণযোগ্য হচ্ছে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে গণঅধিকার পরিষদই হতে পারে জাতির মুক্তির দূত।
গণঅধিকার পরিষদ নিয়ে কতটুকু আশাবাদী জানতে চাইলে দলের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, এই দলের তরুণ নেতারা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ থেকে উঠে এসেছে। যারা মেধাবী ও সৎ। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে গঠিত এই দলের মতো সম্ভবনাময়ী দল বাংলাদেশে নাই।এই দলই আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
দলটির প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে আগামীকাল বুধবার দলীয় কার্যালয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে দলের নেতৃবৃন্দ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এছাড়া দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ২৮ অক্টোবর বিকাল ৩ টায় ঢাকায় আনন্দ র্যালি শোভাযাত্রার আয়োজন করবে।