ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

ফুলবাড়ীতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী তন্ত্রমন্ত্রের পাতা খেলা অনুষ্ঠিত

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর | আপডেট: বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ২০, ২০২২

ফুলবাড়ীতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী তন্ত্রমন্ত্রের পাতা খেলা অনুষ্ঠিত
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পাতা খেলা অনুষ্ঠিত। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় বিশিষ্ট্র ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক আজম মন্ডল রানা'র পিষ্ঠ পোষকতায় উপজেলার ৩ নম্বর কাজিহাল ইউনিয়নের পুখরী স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে কড়াই যুব সমাজের আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

খেলা দেখতে মাঠের চার পাশে নারী-পুরুষ সহ বিভন্ন বয়সের উৎসুক জনতারা পচেপড়া ভীড় জমায়। 

সভ্যতার ক্রমবিকাশ আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাওয়া এই খেলার আয়োজন করায়, খুশি হয়েছেন দর্শকরা। তান্ত্রিকরা তন্ত্র, মন্ত্র দিয়ে এ খেলা করেন।
খেলা শেষে বিজয়ী দলের হাতে একটি খাসি ও রানার্স আপ দলের হাতে একটি রাজহাস পুস্কার হিসেবে তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মো. আজম মন্ডল রানা। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক অমর চাঁদ গুপ্ত অপু, সাবেক ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

আয়োজকরা জানায়, খেলায় অংশ নিয়েছিলেন চারটি তান্ত্রিকদল। অংশ নেওয়া তান্ত্রিকরা হলেন- মাদিলাহাট এলাকার মিলনের দল, কড়াই পশ্চিমপাড়ার আলমের দল, রশিদপুর মিরপুর নুরুজ্জামানের দল ও আমড়া গ্রামের তান্ত্রিক আতিয়ার সর্দারেরদল । অপরদিকে পাতা হিসেবে ছিলেন তিন ব্যক্তি। তারা হলেন  চক মথুরা এলাকার নিকূঞ্জ,শ্রীকৃষ্ণ পুর এলাকার গোলজার হোসেন ভোলা ও কড়াই এলাকার তোশাররফ হোসেন।

খেলায় মাঠের মাঝখানে একটি কলাগাছ গেথে পাতা হিসেবে তিন ব্যাক্তিকে রাখেন। তান্ত্রিকরা তাদের তন্ত্র- মন্ত্রের জোরে সেই পাতাকে টানেন নিজেদের কাছে। যে দল তাদের কাছে পাতাকে টেনে আনতে পারবে তারাই বিজয়ী হবেন।

 ঐতিহ্যবাহী এই খেলা দেখতে মাঠ জুড়ে নারী-পুরুষ সহ বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার উৎসুক জনতার ভিড় ছিল চোখের পড়ার মতো।

খেলায় নিজ নিজ দক্ষতা দেখিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেন তান্ত্রিকরা। খেলায় দুটি পাতা টেনে আলম তান্ত্রিক বিজয়ী হওয়ায় তার দলকে উপহার হিসেবে একটি খাসি উপহার দেয়া হয়। এবং একটি পাতা টেনে রানার্স আপ হওয়ায় তান্ত্রিক মিলন দলকে একটি হাঁস উপহার দেয়া হয়। 

খেলায় অংশ গ্রহণকারী তান্ত্রিক আতিয়ার সর্দার বলেন, এই খেলা আসলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মনসা পূঁজার পরপরই হয়ে থাকে। এই খেলা আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। যে যারমত মন্ত্রের জোরে পাতা টেনে আনেন নিজেদের কাছে। যে বেশি পতা টনেন তাকেই এখানে বিজয়ী হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়।

তান্ত্রিক আলম বলেন, এখানে বিজয়ী হওয়াটাই বড় কথা নয়, এখেলায় তান্ত্রিকের মন্ত্রের শক্তি পরীক্ষা হয়। আমরা ১৫ বছর ধরে এই খেলা খেলছি। যে যত মন্ত্রের শক্তি দেখাতে পারবে সে বিজয়ী  হবে। পুরস্কার বড় নয় জেতাই বড়।