রাতে দোকানের ভেতর কৌশলে ঢুকেছিলেন অজ্ঞাতপরিচয় এক চোর। এরপর দোকানের মালপত্র গোছাতে গোছাতে কখন যে সকাল হয়ে গেছে টেরই পাননি তিনি।
আর সকাল হয়ে যাওয়ায় দোকানের সামনে স্থানীয়দের আনাগোনা বাড়তে থাকায় বিপদে পড়ে যান ওই চোর। দোকান থেকে বের হলেই তো তাকে গণপিটুনির শিকার হতে হবে। এতে তার প্রাণহানিরও শঙ্কা রয়েছে। জনগণের গণপিটুনির হাত থেকে রক্ষা পেতে জাতীয় জরুরি সেবা- ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে সহায়তা চাইলেন ওই চোর।
স্বাভাবিকভাবে নিজের পরিচয় গোপন করে সহায়তা চাওয়ায় পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়। তবে প্রথমে লোকটিকে খুঁজে না পেলেও যখন পাওয়া গেল তখন তো অবাক পুলিশ সদস্যরা। পরে সেই দোকানের ভেতর থেকে সহায়তাপ্রার্থী চোরকে উদ্ধার করে নিয়ে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তির নাম ইয়াছিন খান (৪১)। ঝালকাঠির নলছিটির বাসিন্দা হলেও বরিশাল নগরের কালুশাহ সড়কের একটি ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) ঘটনাটি ঘটেছে বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের এআরখান বাজার এলাকায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেট্রোপলিটন বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, ধরা পড়লে স্থানীয়দের হাতে মারধরের শিকার হতে পারেন এই ভয় থেকে ওই ব্যক্তি ৯৯৯ নম্বরে কল করে সহায়তা চান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বন্ধ একটি দোকানের ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তখন ওই ব্যক্তি পুলিশেকে জানায় পেশায় তিনি একজন চোর। তাকে পুরাতন একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বরিশাল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, বুধবার ভোরে জরুরি সেবা থেকে আমাদের কাছে তথ্য আসে চরকাউয়া ইউনিয়নের এআরখান বাজার এলাকায় বিপদে পড়েছেন এক ব্যক্তি। জরুরি সেবার কনফারেন্সের মাধ্যমে থানার ডিউটি অফিসারের সঙ্গেও কথা বলেন ওই ব্যক্তি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছালে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষে মোবাইলে কল করে জানা যায় তিনি ঝন্টু মিয়ার দোকানের মধ্যে। দোকান থেকে বেরোতে তার অসুবিধা কোথায় জানতে চাইলে পুলিশ সদস্যদের ইয়াছিন খাঁ বলেন, চুরির মালামাল গুছিয়ে ব্যাগভর্তি করতে তার বেশি সময় লেগে গেছে। সময় গড়িয়ে সকাল হয়ে গেছে। লোকজন দোকানের পাশে অবস্থান করছিল। এ অবস্থায় সেখান থেকে বের হলে মারধরের শিকার হতে হবে তাকে। এজন্য বুদ্ধি করে ৯৯৯ নম্বরে কল করেছেন।
দোকান মালিক ঝন্টু হাওলাদার বলেন, পুলিশ আমার দোকানের কাছে এলেও কিছুই অনুমান করতে পারিনি। পরে তার মধ্য থেকে একজনকে বের করায় বুঝতে পারি চোর ধরেছে। পরে জানি ওই চোর ৯৯৯ নম্বরে কল করে সহায়তা চেয়েছে।
তিনি বলেন, দোকানের মালামাল খোয়া যায়নি কিছুই। তবে সবকিছু এলোমেলো করে রেখেছে। ভালো ভালো জিনিস ব্যাগে ভরেছিল। কিন্তু নিতে পারেনি।
চরকাউয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ নম্বরে কল করে নিজেকে ধরা পরার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন এক চোর বলে জেনেছি। এ ঘটনা এখন সবখানে আলোচনা হচ্ছে। যে শুনছে সেই অবাক হচ্ছে।