Can't found in the image content. পাঁচশত টাকার জন্য সাংবাদিকের মাকে হত্যা, ৫ মাস পর আসামি গ্রেফতার | ফ্রিডম বাংলা নিউজ
ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

পাঁচশত টাকার জন্য সাংবাদিকের মাকে হত্যা, ৫ মাস পর আসামি গ্রেফতার

শাফিউল মিল্লাত, পিরোজপুর প্রতিনিধি | আপডেট: বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ২০, ২০২২

পাঁচশত টাকার জন্য সাংবাদিকের মাকে হত্যা, ৫ মাস পর আসামি গ্রেফতার
ভয়েস অব আমেরিকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি আমির খসরুর মা সেতারা হালিমের হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যাকান্ডের ৫ মাস পরে শুক্কুর আলী (৩৮) নামের এক দিনমজুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার (১৯ অক্টোবর) শুক্কুর আলীকে আদালতে পাঠালে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় সে। পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্দার খায়রুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শুক্কুর আলীকে গ্রেফতারের পর তার স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, মাত্র ৫ শত টাকার জন্য খুন করা হয় সাংবাদিক আমির খসরুর মা সেতারা হালিম (৭৫) কে। জেলা শহরের কৃষ্ণচূড়া মোড় থেকে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে শুক্কুর আলী কে মঙ্গলবার (১৮অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে গ্রেফতার করে। শুক্কুর আলী ইন্দুরকানী উপজেলার চরগাজীরপুর গ্রামের বাসিন্দা হাবিব হাওলাদের ছেলে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. জাকারিয়া জানান, হত্যাকান্ডের পরে দীর্ঘদিন চেষ্টা করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আজ ঘটনাস্থলের পাশেই শহরের কৃষ্ণচূড়া মোড় থেকে শুক্কুর আলীকে গ্রেফতার করা হয়। আসামি শুক্কুর আলী একজন দিনমজুর। তিনি সেতারা হালিমের বাসায় একদিন দিনমজুরের কাজ করেন ৭শত টাকা চুক্তিতে। কাজ শেষে তাকে ২শত টাকা দেয়া হয়। তিনি পাওনা ৫ শত টাকা কয়েকবার চাইলেও তাকে তা দেয়া হয়নি। এরপর সমিতির কিস্তি পরিশোধের জন্য একদিন ওই ৫ শত টাকা চেয়েছিলেন। সেদিনও তাকে টাকা না দিয়ে খারাপ ব্যবহার করেন সেতারা হালিম। পরের দিন সমিতির কিস্তি পরিশোধ করেতে না পারায় সমিতির লোকজন তার বাসায় গিয়ে তার স্ত্রীর সাথে খারাপ ব্যবহার করে। বাসায় ফেরার পর স্ত্রী তাকে এ ঘটনা জানালে সেদিনই তিনি প্রতিশোধ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর শুক্কুর আলী সেতারা হালিমের এক পরিচিত জনের সাথে পরিকল্পনা করে। তার পরিচিত জনের সাথে চুক্তি হয় সেতারা হালিমের ঘরে ঢুকে যে মালামাল পাওয়া যাবে তা তারা দু'জন ভাগাভাগি করে নেবেন। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাতে সেতারা হালিম পরিচিতজনের সহায়তায় ঘরে প্রবেশ করে একটি স্যালাইনের পাইপ গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সেতারা হালিমকে। হত্যার শেষে সাংবাদিকের মায়ের বাসায় থাকা স্বর্ণের কয়েক ভরি গহনা ও নগদ টাকা চুরি করে পালিয়ে যায় তারা। তবে পুলিশ আসামি শুক্কুর আলীকে গ্রেফতার করতে পারলেও হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সেতারা হালিমের পরিচিত ব্যক্তিকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি।

পুলিশের পরিদর্শক জাকারিয়া আরও জানান, আসামি শুক্কুর আলীকে গ্রেফতার করে বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠালে আদালত জবানবন্দি শেষে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এছাড়া অপর আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইদুর রহমান জানান, হত্যাকান্ডের পর সাংবাদিক আমির খসরু বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা রুজু করেছিলেন। এ ঘটনার সাথে জড়িত শুক্কুর আলী নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের মোটিভও জানা গেছে। বাকিদের গ্রেফতার করে এ মামলায় দ্রুতই আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, পিরোজপুর পৌর এলাকার সি.আই পাড়ার বাসা থেকে ২০২২ সালের ১৬ মে সোমবার সকালে উদ্ধার করা হয় সেতারা হালিমের মৃতদেহ। সেদিন বাসায় একাই ছিলেন তিনি। সেতারা হালিম পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রয়াত আব্দুল হালিম হাওলাদারের স্ত্রী ও সাংবাদিক আমির খসরুর মা। এ ঘটনায় ১৭ মে সাংবাদিক আমির খসরু বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।