ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪ |

EN

দলিল লেখক সমিতির হাতে অসহায় ক্রেতা-বিক্রেতা

উপজেলা প্রতিনিধি | আপডেট: মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৮, ২০২২

দলিল লেখক সমিতির হাতে অসহায় ক্রেতা-বিক্রেতা
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বাদশাগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রি অফিসে জমি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে দলিল লেখক সমিতির অনিয়ম, দুর্নীতি ব্যাপক হারে বেড়েই চলেছে। সমিতির হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা। জমি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে লেখকের পারিশ্রমিক ছাড়া লাখে ৬ হাজার ৫০০ টাকা সরকারিভাবে ফি নেয়ার কথা। কিন্তু লাখে ১৩-১৪ হাজার টাকার কমে দলিল হয় না বাদশাগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রি অফিসে । কাগজপত্রে সামান্যতম জটিলতা থাকলে নেয়া হয় আরোও বাড়তি টাকা। এমন অভিযোগ করেছেন অসংখ্য ভুক্তভোগী জমি ক্রেতা – বিক্রেতা। ভুক্তভোগী ছাড়াও সমিতির অন্তর্ভুক্ত একাধিক দলিল লেখকের সাথে যোগাযোগ করা হলেও অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ের সত্যতা পাওয়া গেছে। 

জানা গেছে, ধর্মপাশা উপজেলার বাদশাগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক সমিতির হাতে জমির দাতা- গ্রহীতাদের জিম্মিদশার অবস্থা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে দাতা- গ্রহীতাদেরকে জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে জমি রেজিষ্ট্রেশন করতে বাধ্য করা হচ্ছে। সরকারি নির্ধারিত ফি’র দিগুণ হারে টাকা আদায় করছে সমিতি। যার ফলে সাধারণ ও নিরীহ মানুষ জমি রেজিস্ট্রি করতে গিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে। জমি রেজিষ্ট্রেশনে আদায়কৃত অতিরিক্ত টাকা ভাগবাটোয়ারা করছেন সমিতির নেতা-সদস্যরা। রাতারাতি বনে গেছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। অনেকেই গড়ে তুলেছেন আলীশান ভবন।

বাদশাগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রি অফিসে প্রতি সপ্তাহে শুধুমাত্র বুধবারে দলিল রেজিস্ট্রি হয়। জমি রেজিষ্ট্রেশনের নামে নেয়া অতিরিক্ত ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা বুধবার রাতেই ভাগাভাগি হয় । এর মধ্যে অফিস খরচ দিতে হয় লাখে দুই হাজার টাকা। যেসব লেখকের কপালে কোন দলিল জুটেনা শ্রেণী অনুযায়ী তারাও পায় অতিরিক্ত টাকার ভাগ।

আইন অনুযায়ী দলিল লেখকরা দলিল লেখার বিনিময়ে পারিশ্রমিক ও সরকারি ফি’র হার নির্ধারণ করে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে একটি করে তালিকা টানিয়ে রাখার নির্দেশনা রয়েছে। বাদশাগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রি অফিসে এরকম কোন তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুল ছোবহান অতিরিক্ত টাকা নেয়া ও অফিসে খরচ নেয়ার বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, একটি সাফকবলা দলিল রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত অফিস খরচসহ ১২% এর বেশী টাকা খরচ হয়। তা ছাড়া দলিল রেজিস্ট্রি করতে অফিসে খরচ দেয়া নতুন কিছু নয়, দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। বর্তমানে ও অফিসে খরচ দিতে হচ্ছে।
বাদশাগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী ফয়জুল হক দলিল রেজিষ্ট্রেশনের ক্ষেত্রে অফিস খরচ নেয়ার বিষয়টি সঠিক কি না । আপনি স্যারের সাথে যোগাযোগ করে। বলে তিনি ফোন কেটে দেন।

ধর্মপাশা উপজেলার বাদশাগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সাবরেজিস্টার মো. মঞ্জুরুল আমিন অফিস খরচের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন. সাবরেজিস্ট্রি অফিসে কোন অনিয়ম দূর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান  বলেন, অভিযোগ পেলে  তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।