ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

পায়ে হেঁটে বিশ্বভ্রমণ: ১৩ হাজার কিঃমিঃপথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নেপালি যুবক

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর | আপডেট: রবিবার, অক্টোবর ১৬, ২০২২

পায়ে হেঁটে বিশ্বভ্রমণ: ১৩ হাজার কিঃমিঃপথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নেপালি যুবক
নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ড থাপাথালি এলাকার ২৭ বছর বয়সী টগবগে যুবক ‘ইঃ’। শখ থেকেই পায়ে হেঁটে বিশ্বভ্রমণে বের হয়েছেন এই যুবক। নেপাল ভারত, শ্রীলঙ্কা হয়ে পৌছেছেন বাংলাদেশে। এরই মধ্যে টেকনাফ থেকে হেঁটে রওনা দিয়েছেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার উদ্দেশ্যে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় তিনি দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় পৌছে রাত্রীযাপন করেন জেলা পরিষদ ডাকবাংলোতে। এরপর গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টায়  ফুলবাড়ী থেকে সৈয়দপুর, নীলফামারী হয়ে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। এর আগে যাত্রা বিরতির পর শনিবার জয়পুরহাট, পাঁচবিবি, হাকিমপুর, বিরামপুর হয়ে ফুলবাড়ী পৌছান তিনি।

বাংলাদেশের টাঙ্গাইল থেকে তার ভ্রমণ সঙ্গী হয়েছেন আলোকচিত্রি ও লেখক হোমায়েদ ইসহাক মুন তাদের সাথে ফুলবাড়ী থেকে যুক্ত হয়েছেন ঢাকার ফ্যাশান ডিজাইনার সবুজ কুমার বর্মন।

জানতে চাইলে নেপালি যুবক ইঃ বলেন, তিনি পায়ে হেঁটে বিশ্বভ্রমণের অংশ হিসেবে প্রথমে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সমগ্র নেপাল হেঁটে ভ্রমণ করেন। পরে ২০২১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতের কারগীল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এবং সমগ্র ভারত ভ্রমণ করেন। সেখানে এক মাস বিশ্রাম নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ শেষে; চলতি বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এসে পৌঁছালে, ১৮ সেপ্টেম্বর টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ থেকে পায়ে হেঁটে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া-বাংলাবান্ধার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ইতোমধ্যেই তিনি পাঁচ বছরে তিনটি দেশে প্রায় ১৩ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন। বাংলাদেশে ২৮ দিনে ৮০০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে ফুলবাড়ী পৌছান।  তিনি বাংলাবান্ধা হয়ে নেপাল যাবেন এবং নেপাল থেকে পরবর্তী ভ্রমণের রোডম্যাপ নির্ধারণ করবেন। তবে পায়ে হেঁটে বিশ্বভ্রমণের পরবর্তী পর্যায়ে তিনি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ভ্রমণ করবেন বলে জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে তার মোট ১ হাজার কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে ভ্রমণ শেষ হবে। তাতে করে তার চারটি দেশে মোট ১৪ হাজার কিলোমিটার পথ ভ্রমণ সম্পন্ন হবে।

পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিশ্বভ্রমণে বের হয়েছেন নেপালি তরুণ 'ইঃ'। নানা দেশের মানুষের সংস্কৃতি জানার আগ্রহ থেকে কাঠমান্ডু থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই ভ্রমণে আগ্রহী ইঃ। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি স্কুল ছাড়েন। এরপর ছেড়েছেন পরিবারও। তখন থেকে ভ্রমণই তার জীবন।
ইঃ বলেন, বাংলাদেশে এসে ‘পথে পথে সবুজ ফসলের মাঠ ও প্রাকৃতিক সুন্দর্য দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। গ্রামের হাটবাজারগুলোতে অনেকেই তাকে দেখে আগ্রহ নিয়ে কথা বলতে আসছেন। কেউবা চা-বিস্কুট খাওয়ার আমন্ত্রণও জানাচ্ছেন। গ্রামের মাঠে কাজ করা কৃষকেরাও তাকে স্বাগত জানাচ্ছেন, হাসিমুখে কথা বলছেন। স্থানীয় লোকজনই তার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। বাঙালির আতিথেয়তায় তিনি অভিভুত।’

ইঃ এর ভ্রমণসঙ্গী বাংলাদেশের আলোকচিত্রী ও লেখক হোমায়েদ ইসহাক মুন। তিনি ওই নেপালি তরুণের বাংলাদেশি বন্ধু। মুন বলেন, কয়েক বছর আগে এভারেস্ট পর্বতের বেজক্যাম্পে গিয়ে ইঃ’র সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়। পায়ে হেঁটে নেপাল, ভারত, শ্রীলঙ্কা পাড়ি দেওয়ার পর বাংলাদেশ ভ্রমণের পরিকল্পনা করলে তার সফর সঙ্গী হয় সে।