শাবনূর, ঢাকাই সিনেমার রোমান্টিক নায়িকা। যার সময় কাটত লাইট ক্যামেরা অ্যাকশনের মধ্যে। অভিনয়ে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন শাবনূর। অনেক সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন ক্যারিয়ারে। সেই ক্যারিয়ারের পথচলার তিন দশক পূর্ণ করেছেন এ নায়িকা। শাবনূরের যাত্রা শুরু হয়েছিল এহতেশামের হাত ধরে ‘চাঁদনী রাতে’ সিনেমায় মধ্য দিয়ে।
এ সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন নায়ক সাব্বির। সিনেমাটি ১৯৯৩ সালের ১৫ অক্টোবর মুক্তি পায়। এরপর অভিনয় করেছেন শতাধিক সিনেমায়। প্রথম সিনেমা মুক্তি সময়কাল থেকে এ নায়িকা ক্যারিয়ারের ৩০ বছর পূর্ণ করেছেন গতকাল। যদিও প্রথম সিনেমা ব্যবসায়িকভাবে সফলতার মুখ দেখেনি। চিত্রনায়ক আমিন খানের সঙ্গে দ্বিতীয় সিনেমা ‘দুনিয়ার বাদশা’ দিয়েই আলোচিত হন শাবনূর। এর পর ১৯৯৪ সালের ২২ মে মুক্তি পায় তার অভিনীত জহিরুল হক পরিচালিত ‘তুমি আমার’ সিনেমাটি। এ সিনেমার মধ্য দিয়ে সালমান শাহর সঙ্গে জুটি বাঁধেন শাবনূর।
শুরু হয় এ নায়িকার একক অনন্য অধ্যায়। এ সিনেমার পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি শাবনূরকে। জুটি হিসাবে সে সময় সালমান-শাবনূর হয়ে ওঠেন দর্শকদের নয়নমণি। তবে ১৯৯৬ সালে সালমান শাহের অকাল মৃত্যুর পর শাবনূরের পথচলা কিছুটা থমকে যায়। সালমান আত্মহত্য করেছেন (যদিও পরিবারের দাবি খুন এবং এ নিয়ে এখনো মামলা চলমান)। সালমান ভক্তরা এখনো তার আত্মহত্যার জন্য সালমানের স্ত্রী সামিরার পাশাপাশি শাবনূরকেও অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। সালমানের প্রয়াণের পর শাবনূর রিয়াজের সঙ্গে জুটি বাঁধেন। তবে সেটা স্থায়ী হয়নি। আরও অনেকের সঙ্গে সিনেমা করেছেন। কিন্তু সালমানের সঙ্গে যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন, সেটা আর ফিরে পাননি। যদিও নিজের অভিনয় কারিশমায় টিকে ছিলেন আরও অনেক বছর। ঢাকাই সিনেমায় যখন অশ্লীলতা ভর করে তখন নিজেকে গুটিয়ে নেন এ নায়িকা। পাড়ি জমান অস্ট্রেলিয়ায়।
বর্তমানে সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা। বিয়ে করে হন সংসারী। এক পুত্র সন্তানের মা-ও তিনি। মাঝে মধ্যে দেশে আসেন। সিনেমায় ফেরার গল্পও শোনান। তবে কবে ফিরবেন সেটা পরিষ্কার নয়। ক্যারিয়ারে তিন দশক পূর্তিতে অস্ট্রেলিয়া থেকে মোবাইল ফোনে শাবনূর বলেন, ‘চলচ্চিত্রে এখনো যথেষ্ট সম্মান নিয়েই আছি। অভিনয় জীবনের পথচলায় আমার প্রত্যেক সিনেমার পরিচালক, প্রযোজক, সিনেমাটোগ্রাফার, কাহিনিকার, প্রোডাকশন বয়, ট্রলিম্যান থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে আমার বোন ঝুমুরের কথা উল্লেখ করতেই হয়। সবারই সহযোগিতায় আমি আজকের শাবনূর। সবাই আমার জন্য, আমার সন্তান ও পরিবারের সবার জন্য দোয়া করবেন।’