ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, অক্টোবর ১৯, ২০২৪ |

EN

তারা খুদে চিকিৎসক

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: শুক্রবার, অক্টোবর ১, ২০২১

তারা খুদে চিকিৎসক

চারঘাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গেট পার হয়ে আঙিনায় ঢুকতেই দেখা গেল ওদের। বয়স সবার সাত থেকে এগারো। সাদা অ্যাপ্রোন পরে ভীষণ ব্যস্ত ওরা।

 

অ্যাপ্রোন পরিহিত বেলাল ফারদিন, অর্ণব সানি ও তাসমিয়া ইয়াসমিন গভীর মনযোগে বিদ্যালয়ে আসা শিক্ষার্থীদের থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপছে। এই খুদে চিকিৎসকেরা তাপমাত্রা মাপার পর শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করছে।

 

চারঘাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে ১৮ শিক্ষার্থীকে নিয়ে গড়া একটি ‘খুদে চিকিৎসকের দল রয়েছে। করোনার ধকল কাটিয়ে বিদ্যালয় খুলেছে। খুদে চিকিৎসকের এই দলটি প্রতিদিন থার্মোমিটার দিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা, শিক্ষার্থীদের স্যানিটাইজার ব্যবহার, মাস্ক পরা ও কিছুক্ষণ পরপর সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কাজ তদারকি করছে।

 

 

জানা গেছে, বিদ্যালয়ে কৃমি ও রোগ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে জোরদার করার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ২০১১ সাল থেকে উদ্ভাবন করা হয় এই খুদে ডাক্তার কার্যক্রম। পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৃমি নিয়ন্ত্রণ, জলাতঙ্ক, ম্যালেরিয়া, পুষ্টিহীনতা, ভিটামিন এ-প্লাস ক্যাম্পেইন, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা বিষয়ে স্বাস্থ্য-শিক্ষা প্রদানসহ শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হয়। এরপর থেকে এ কার্যক্রম চালু রয়েছে চারঘাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

 

চারঘাট উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ‘খুদে চিকিৎসকেরা অন্য শিক্ষার্থীদের সাবান দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়া, বিভিন্ন স্বাস্থ্যবার্তা, বিভিন্ন অনুশীলনে সহায়তা ও তদারকি করে। একজন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করেন।

 

চারঘাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামিমা সুলতানা এ বিষয়ে বলেন, 'বর্তমানে করোনা মহামারি চলছে। আমার বিদ্যালয়ের খুদে ১৮ সদস্যের চিকিৎসকের একটি দল আছে। দলটি নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের হাত ধোয়া, শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা, মাস্ক পরা নিশ্চিত করছে। সহকারী শিক্ষক তপতী রানি ঘোষ দলটিকে সহযোগিতা করছেন।'

 

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'আমাদের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খুদে চিকিৎসকের কার্যক্রম চলমান আছে। এ কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রহমান বলেন, 'কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে সচেতন করার পাশাপাশি মানুষের প্রতি সহমর্মিতা, মমত্ববোধ, সমাজসচেতন, দেশপ্রেমিক ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এ কর্মসূচি। আশা করছি এই খুদে চিকিৎসক টিম ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে দেশ ও জনগণের সেবায় এগিয়ে আসবে।'