লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষ্যে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকার সুজাপুর গ্রামে সোমবার বিকেলে বসেছিল অর্ধশত বছরের ঐতিহ্যবাহী বউমেলা। এ মেলায় ক্রেতা শুধু নারীরাই। প্রতি বছর লক্ষ্মীপূজার পরেরদিন এই মেলা আয়োজন করা হয়। মেলার আগের দিন পুরো এলাকায় মাইকিং করে প্রচার করা হয়। এরপর মেলার দিন সকাল থেকে শুরু হয়, সাজসজ্জার কাজ,বিকেল থেকে আসতে শুরু করেন ক্রেতারা।
সরেজমিনে মেলা ঘুরে দেখা গেছে, মেলা জুড়ে সামিয়ানা টানিয়ে পসরা সাজিয়ে বসে আছেন দোকানিরা। মেয়েদের প্রসাধনী সামগ্রী মেলার প্রধান উপজীব্য হলেও একই সঙ্গে স্থান পায় ছোটোদের খেলনাসামগ্রী,হস্তশিল্প আর গৃহস্থালির নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ রকমারি মুখরোচক খাবার।
সুজাপুর সর্বজনীন দুর্গামন্দির চত্বরে নারীদের জন্য আয়োজিত এই মেলার আশপাশে বিপুলসংখ্যক পুরুষ ভিড় জমাতে দেখা গেলেও তাঁদের মেলায় প্রবেশের কোনো অনুমতি ছিল না। বিক্রেতার মধ্যে নারীদের পাশাপাশি পুরুষ থাকলেও শিশু,কিশোরী ও নানা বয়সের নারী ক্রেতাদের নিয়ে জমে উঠে দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী এই বউমেলা।
মেলায় কেনাকাটা করতে আসা সুমিতা,প্রিয়াংকা,দিপ্তি সহ অনেকে জানান, লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষ্যে প্রতিবছরই এই বউমেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় শুধু নারীরাই ক্রেতা, আবার অনেক দোকানে নারীরাই বিক্রেতা হওয়ায় নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়ানোসহ কেনাকাটা করা যাচ্ছে। এ যেনো অন্যরকম আনন্দ।
মেলার আয়োজক সুজাপুর সর্বজনীন দুর্গা মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি অশেষ রঞ্জন দাস, বলেন, লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষ্যে দীর্ঘ ৬৩ বছর ধরে বউমেলার আয়োজন করা হচ্ছে । মেলাটি জমিদার ভীমল বাবুর সময় থেকে শুরু হয়। তিনি প্রতি বছর লক্ষ্মীপূজার পরেরদিন এই মেলার আয়োজন করতেন, তখন থেকে আজও মেলাটি চলমান রয়েছে। মেলাটি শুধু নারীদের জন্যই। তাই মেলায় পুরুষের প্রবেশ নিষেধ। বাড়ী বউয়েরা এই মেলায় আসেন তাই এই মেলার নাম বউ মেলা। তিনি বলেন মেলার নিরাপত্তার জন্য পুলিশ নজরদারী রেখেছেন। এতে নারী ক্রেতারাও নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারছেন।