সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজা, এ উপলক্ষে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে শতবছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী বিজয় দশমীর দিনে গতকাল বুধবার ছোট যমুনা নদীর পাড়ে ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ মাঠে মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মেলায় সকাল থেকে শুরু হয় সাজসজ্জার কাজ।এরপর দুপুর ১২ টার পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন পুজা মন্ডব থেকে দুর্গা প্রতিমা গুলোকে সেখানে নিয়ে এসে মেলা প্রাঙ্গনের পাশে নদীর তিরে সারিবদ্ধ ভাবে সাজিয়ে রাখা হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠে মেলা প্রাঙ্গন। মেলায় মিঠাই-মিষ্টান্নসহ মৌসুমী ফল, কসমেটিক্স ও শিশুদের মাটি ও কাঠের তৈরী খেলনার হরেক রকমের পসরা বসায় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। এই মেলায় ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরী সোপিচ, আসবাবপত্র পসরা বসায় শিল্পিরা। এসব পণ্য কেনার জন্য দুর-দুরান্ত থেকে ক্রেতারা এসে ভিড় করে।এরপর বিকেল গড়িয়ে
সন্ধা হবার পর,নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে মেলা শেষ হয়।
মেলা আয়োজকরা জানায়, দুর্গাপুজা উপলক্ষে এই দুর্গামেলা ফুলবাড়ীর শত বছরের একটি ঐতিহ্যবাহী মেলা। প্রাচিনকাল থেকে ফুলবাড়ীতে দুর্গাপুজার দশমী বা বিসর্জনের দিনে এই দুর্গামেলা অনুষ্ঠিত হয়। তবে করোনা কালীন সময় গত দুই বছর এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। ফুলবাড়ীসহ আশ পাশের এলাকার সকল ধর্মের মানুষ এই মেলায় আসে কেনা কাটা করার জন্য।এর মধ্য শিশু কিশোরদের আগ্রহ বেশি লক্ষ করা গেছে।
মেলায় আসা নকুল রায় (৫০) বলেন, আগে ছোট বেলায় তার পিতার হাত ধরে এই দুর্গামেলায় আসতেন। এখন তার নাতী-নাতনীদের নিয়ে আসেছেন মেলায়। তিনি বলেন, অতিতে ফুলবাড়ীতে জমিদারদের বসবাস ছিল, তারাই দুর্গাপুজোর দশমীর দিনে এই দুর্গামেলার আয়োজন করত। সেই থেকে এই মেলা চলে আসছে।
দিনাজপুর জেলা শাখা পুজা উদযাপন পরিষদের অন্যতম সদস্য সহকারী অধ্যাপক অমর চাঁদ গুপ্ত অপু বলেন, এবার উপজেলার সাতটি ইনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ৫৯টি পুজা মন্ডপে উৎসবমুখর পরিবেশে,শান্তীপুর্ণভাবে দুর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।পুজা উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী এই মেলায় প্রতি বছর বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে। আমরা ছোট থেকে বিজয়া দশমীর দিনে এই মেলা দেখছি। এখন আমাদের পরের প্রজন্মও দেখছে-দেখবে। এই মেলা আমাদের ঐতিহ্য।