অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এনআরবি ব্যাংকের পরিচালক এম বদিউজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী নাসরিন জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সংস্থাটির সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১ এ পৃথক দুই মামলা দায়ের করা হয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে একটিতে বদিউজ্জামানকে এবং অপর মামলায় স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই আসামি করেন। মামলায় দুজনের বিরুদ্ধে আড়াই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আরিফ সাদেক এসব তথ্য জানিয়েছেন।
বদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, অবৈধ পথে আয়ের অর্থে নিজ নামে মোট ১ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার ৭২২ টাকা সম্পদ অর্জন করেন এম বদিউজ্জামান। পরবর্তীতে সে সম্পদ তিনি দখলে রাখেন। দুদকের অনুসন্ধানে এনআরবির এই পরিচালকের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি প্রমাণ পাওয়ায় দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
দুদকের দায়ের করা অন্য মামলায় আসামি করা হয় বদিউজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী নাসরিনকেও। এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি নাসরিন জামান তাঁর স্বামীর অবৈধ আয়ের টাকা নিজ নামে রাখেন এবং তা ভোগ করেন। অনুসন্ধানে এই ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী ১ কোটি ৪৯ লাখ ২৮ হাজার টাকার মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) এবং ১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
২০১৯ সালে এনআরবির পরিচালক এম বদিউজ্জামান ও নাসরিন জামান এবং তৌহিদা সুলতানার বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অভিযোগ আসে দুদকে। যাচাই বাছাই শেষে গত বছরের মাঝামাঝি থেকে অনুসন্ধান শুরু করে। একই বছর ৭ সেপ্টেম্বর দুদক তাদের সম্পদের বিবরণী চেয়ে নোটিশ জারি করে।
দুদক বদিউজ্জামান ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আড়াই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ পেলেও অভিযোগ সূত্র বলছে, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এফ-ব্লকে ১০ কোটি টাকা মূল্যের একটি সুবিশাল বাড়ি নির্মাণ করেছেন বদিউজ্জামান। একই আবাসিক এলাকায় ৫ কাঠা জমির ওপর একটি সাততলা বাণিজ্যিক ভবনও রয়েছে তার। এ ছাড়া ঢাকায় আরও অভিজাত এলাকায় তার একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট রয়েছে বলে অভিযোগে জানা যায়। ঢাকার বাইরেও রয়েছে বদিউজ্জামানের পরিবারের সদস্যদের নামে কেনা কোটি টাকা মূল্যের জমি।
জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানায় প্রায় ১০ কেটি টাকা মূল্যের ১৪৮ বিঘা ভূমির ওপর বদিউজ্জামানের একটি পার্ক রয়েছে। এ ছাড়া গোপালগঞ্জ জেলা সদরে রয়েছে প্রায় ৩৫০ বিঘা ভূমির ওপর অ্যাডভান্স নিরালা ও অ্যাডভান্স সুগন্ধা নামে আবাসিক প্রকল্প। এ ছাড়া রয়েছে গোপালগঞ্জ সদরে সার্কিট হাউস রোডে বিলাস বহুল আবাসিক বাড়ি। এসব স্থাবর সম্পদের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩৩২ কোটি টাকা।