রাতে সিজারিয়ানে কন্যা সন্তানের জম্ম সকালে সাটুরিয়া সরকারি আর্দশ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রী রুনা আক্তার গণিত পরীক্ষা অংশ নেয়।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া কর্ণেল মালেক উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী রুনা আক্তার। এই ছাত্রীকে তার পিতা মাতা প্রায় দুই বছর আগে বাল্য বিয়ে দেয়। সে গতকাল বুধবার সন্তান প্রসব ব্যাথা নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং ওইদিন রাতেই সে সাটুরিয়ার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান করে কন্যা সন্তানের মা হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে সে ক্লিনিক থেকে হেঁটে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসলে তার হাতে ক্যানোলা ও কোমরে বেল বাঁধা অবস্থায় দেখেন দায়িত্বরত কেন্দ্রে প্রবেশের আগে চেককারী নারী শিক্ষকরা। তখন তারা জানতে পারেন ওই ছাত্রীর সন্তান প্রসব করেছেন। বিষয়টি কেন্দ্র সচিবকে জানালে রুনা তার সিটে বসেই পরীক্ষা দিবেন বলে জানায়। এ ঘটনায় কেন্দ্র সচিব বলেন, ইংরেজী পরীক্ষা চলকালীন সময়ে হরগজ শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের আরো দুই শিক্ষার্থী সন্তান প্রসব করেছেন বলে জানান।
রুনা আক্তার জানায়, দুদিন আগে থেকে পেটে ব্যাথা করছিল। ব্যাথা নিয়েই অন্যন্য পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। বিষয়টি কাউকে জানাইনি। বুধবার রাতে বেশি ব্যাথা অনুভব করায় আমার পরিবার আমাকে সাটুরিয়ার পারভীন নার্সিং হোমে ভর্তি করে। ওই রাতেই সিজারিয়ান করে কন্যা সন্তানের জম্ম হয়। আমি ও আমার নবজাত শিশু ভালো আছি। একদিনের শিশু বাচ্চাকে ক্লিনিকে রেখে আজকে গণিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি।
কর্ণেল মালেক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল সালামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, লেখাপড়ায় রুনা আক্তারের অনেক আগ্রহ আছে। ওই ছাত্রী অত্র বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের ছাত্রী। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে সে একটি কন্যা সন্তানের জম্ম দিয়েছে। তারা দুজনই সুস্থ্য আছে।
সাটুরিয়া উপজেলা এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব ও সরকারি সাটুরিয়া আদর্শ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জসিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার ইংরেজী পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আরো দুই ছাত্রী সন্তান প্রসব করে। ওইসব পরীক্ষার্থীরা সুস্থ্য আছেন। রুনা আক্তার গণিত পরীক্ষায় তার সিটে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছে। তবে ওইসব পরীক্ষার্থীর জন্য একজন মেডিকেল অফিসার সর্বাক্ষণিক দেখাশুনা করছেন।
সাটুরিয়ার সচেতন মহল মনে করেন, মেয়েদের অভিভাবকরা সচেতন না হলে বাল্যবিয়ে রোধ করা সম্বব নয়। সচেতন না হলে অকালেই ঝড়ে পড়বে এসব মেয়েরা।