ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

ধনবাড়ীতে সিএনজি’র দখলে সড়ক-জনদুর্ভোগ চরমে!

হাফিজুর রহমান, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি | আপডেট: সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২

ধনবাড়ীতে সিএনজি’র দখলে সড়ক-জনদুর্ভোগ চরমে!
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে সিএনজি’র দখলে পৌর শহরের ঈদ গাঁ সড়কটি। সড়কটি সংস্কারের পরেই দখলে নিয়েছে সিএনজি চালকরা। সড়কের পাশে সিএনজি মেরামতে দোকান। সড়কে একাধিক সিএনজি রেখে মেরামত করা হচ্ছে। এতে পথচারীরা ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করেছে, সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের।

পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী ছিল ঈদগাঁ সড়কটি সংস্কারের। দীর্ঘদিন বর্ষার সময় হাটু পানিতে নিমজ্জিত হয়ে থাকত এই জনবহুল সড়কটি। সম্প্রতি ধনবাড়ী পৌরসভার নব নির্বাচিত মেয়র মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকল দায়িত্বভার পাওয়ার পরেই সরকারের নিয়মানুযায়ীই দ্রুত এ সড়ক সংস্কারের উদ্যেগ নিয়ে স্বল্প সময়ের ভিতরেই শেষ করেছেন তার নির্মাণ কাজ। এত দিনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে; নতুন দুর্ভোগের কারণ দাঁড়িয়েছে সড়কটিতে অবৈধ পার্কিং। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়কটি শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ সড়কে দিয়ে পাঁচ-ছয়টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। এছাড়াও; ধনবাড়ীর ঐতিহ্য জমিদার বাড়ী, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসসহ অন্যান্য সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করা হয় এ সড়কেই। সড়কে অবৈধ পার্কিং এর কারণে চলাচলে সবাই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নিষেধ করলেও মানছেন চালকরা। বিষয়টি দ্র্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী তাঁদের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,  পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র বাসষ্টান্ড হতে ঈদগাঁ সড়কটি চলে গেছে জমিদার বাড়ী হয়ে উপজেলার বিভিন্ন দিকে। সড়কের দুই পাশ রয়েছে নবাবী আমলের প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, উপজেলার পল্লী বিদুৎ অফিস, স্কুল-কলেজ ও বাসাবাড়ী। চলাচল করছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, জরুরী সেবার গাড়ী, কর্মজীবিসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ। কিন্তু সড়কের দুই পাশ জুড়ে সিএনজি-অটোরিকশা রাখায় সড়কটি সরু হয়ে গেছে। এছাড়াও; সড়কের পাশে সিএনজি মেরামতে দোকান। সড়কে একাধিক সিএনজি রেখে মেরামত করা হচ্ছে। এতে পথচারীরা ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করেছে, সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। সময় এু পৌঁছাতে পারছে না শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। 

মুদি ব্যবসায়ী সুজন সরকার ও আব্দুল মালেক বলেন, ‘আগে সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে হাঁটু পানি জমতো। মেয়রের উদ্যোগে সংস্কার করা হলেও এখন আরেক ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। বাষ্টান্ডের বিভিন্ন এলাকার সিএনজি চালকেরা অবাধে সিএনজি রাখে। গত কয়েক দিনে আরও বেচা-বিক্রি কমে গেছে।’

ঔষুধ ব্যবসায়ী ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘সিএনজি চালকদের বারবার না করি। কোন কাজই হয় না। মেয়রও মাঝমাঝে এসে সিএনজি রাখতে নিষেধ করলে তখন সরিয়ে নিলেও পরবর্তীতে আবার রাখে। অপর ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন এলাকার চালকেরা দিনভর সিএনজি রেখে দেয়। দোকানে ক্রেতা আসতে সমস্যা হয়।’

আসিয়া হাসান আলী মহিলা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থী আকলিমা জাহান আলো,অনামিকা ইয়াসমিন ও আছমা আক্তার বলেন, ‘সব সময়ই এভাবে সিএনজি রাখা হয়। যাতায়তে অনেক সমস্যা হয়। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করি।’

সরকারী নওয়াব ইনস্টিটিউশনের ছাত্র নাজমুল হাসান তালুকদার ও নিরব হোসেন বলেন, ‘সিএনজি জটের কারণে স্কুলে পৌঁছাতে দেরি হয়। সব সময় রাস্তাতে জট লাগিয়ে রাখে সিএনজি চালকেরা।  যেখানে সেখানে সিএনজি ঘুরানো হয়।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাহদত হোসেন বলেন, ‘এ রাস্তার আগে ছিল হাঁটু পানি সমস্যা এখন সিএনজি-অটোরিকশা রাখায় সমস্যা। এক ভোগান্তি কমে আরেক ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে।’

সিএনজি চালক রাশেদ মিয়া বলেন, ‘সামান্য সময়ের জন্য সিএনজি রেখে বিশ্রাম নেই। একাধিক সিএনজি রাখা ভোগান্তিতে পড়েন পথচারীরা। অপর চালক কাদের হোসেন বলেন, অনেক সময় যানযটের সৃষ্টি হয় দুপাশে সিএনজি রাখাতে কিন্তু কেউ তো রাখা বাদ দেন না। এ সুযোগে চালকেরা এখানে সিএনজি রাখে।’

উপজেলা সিএনজি-অটোরিকশা সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল বলেন, ‘সড়কটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ। চালকদের ওই স্থানে সিএনজি-অটোরিকশা রাখা নিষেধ করা হবে এবং দ্রুতই থেকেই পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পৌরসভার মেয়র মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকল বলেন, ‘দীর্ঘদিনে পৌরবাসীর দাবী ছিল সড়কটি সংস্কার। কাজটি সম্প্রতি শেষ হয়েছে। সিএনজি-অটোরিকশা রাখার না বিষয়ে চালকদের সতর্ক করা হবে’