জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: রবিবার, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১
বরগুনার
একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রীর জোরপূর্বক আপত্তিকর ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করে ভিডিও
শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকে ছড়িয়ে দিয়েছে সহপাঠী নাঈম। গতকাল শুক্রবার এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর
পরিবার থানায় মামলা করতে গেলেও কোনো
সহযোগিতা পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিচারে সহযোগিতা না পাওয়ায় আত্মহত্যার
হুমকি দিয়েছে ওই ছাত্রী।
বখাটে
নাঈম উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাজির
খাল গ্রামের সৌদিপ্রবাসী সগির খানের ছেলে।
সগীর খানের স্ত্রী ছেলে নাঈমকে নিয়ে
পৌর শহরে ভাড়া বাসায়
থাকেন।
ভুক্তভোগী
ওই ছাত্রী জানায়, একই স্কুলের সহপাঠী
নাঈম দীর্ঘদিন ধরে তাকে প্রেমের
প্রস্তাব দিয়ে আসছে। এ
ছাড়া বিভিন্ন সময়ে পথেঘাটে উত্ত্যক্ত
করত সে। গত বুধবার
স্কুল ছুটির পর ক্লাস থেকে
বের হওয়ার আগেই নাইম ওই
ছাত্রীর স্কুলব্যাগ নিয়ে বাইরে বের
হয়ে যায়। সে নাইমের
কাছে ব্যাগ আনতে গেলে নাইম
তাকে জোর করে জড়িয়ে
ধরে চুমু খায়। এই
দৃশ্য পাশ থেকে একই
শ্রেণির সবুজ গোপনে ভিডিও
করে, যা পরে ফেসবুকে
ছেড়ে দেয় নাঈম।
ছাত্রীটি
বলেছে, `বিষয়টি লজ্জায় কাউকে জানাইনি। কিন্তু শুক্রবার সকালে আমার এক প্রতিবেশী
ভিডিওটি আমাকে দেখালে বিষয়টি আমি মাকে জানাই।'
ছাত্রীর
মা বলেন, `নাঈম আমার মেয়েকে
বিভিন্ন সময়ে উত্ত্যক্ত করে
আসছে। এ নিয়ে এক
বছর আগে নাঈমের মামা
ইউসুফের কাছে নালিশ করেও
কোনো সমাধান পাইনি। এর পরে গত
দুই দিন আগে আমার
মেয়েকে নিয়ে একটি আপত্তিকর
ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় নাইম। এই
ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখার পর আমার মেয়েকে
মারধরও করি। এরপর বিষয়টি
স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানালে তিনি
বিচার করবেন বলে আমাদের সন্ধ্যা
পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। প্রধান
শিক্ষক নাঈমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হওয়ার
পর শুক্রবার রাত ৯টার দিকে
পাথরঘাটা থানায় গিয়ে বিষয়টি ওসি
আবুল বাশারকে জানাই এবং মামলা দায়েরের
জন্য বলি। কিন্তু ওসি
দীর্ঘক্ষণ আমাদের বসিয়ে রেখেও মামলা নেননি। এরপর আমি আবারও
মামলা করার কথা জানালে
তিনি ফিরিয়ে দিয়ে বলেন, ‘পরে
যোগাযোগ করেন।’
প্রধান
শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, `স্কুল
ছুটির পরে স্কুলগেটের বাইরে
এ ধরনের একটি অপ্রীতিকর ঘটনার
কথা শুনেছি। এ বিষয়ে নাইমের
পরিবারকে অবহিত করলে তারা নাঈমকে
হাজির করতে পারেনি। সে
কারণে আমরা বিষয়টি নিয়ে
সমাধানে যেতে পারিনি।'
এ
ব্যাপারে নাঈমের মায়ের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ
বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ওসি আবুল বাশার
জানান, রাতে স্কুলছাত্রী ও
তার মা থানায় এসে
বিষয়টি জানিয়ে গেছেন। তাঁরা মামলা করার জন্য আসেননি,
বরং মৌখিক অভিযোগ করতে এসেছেন বলে
জানিয়েছেন। তাঁরা যদি লিখিত অভিযোগ
দেন তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।