ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
অপরাধ জগতের মহারাজ যেন
সমালোচনার তুঙ্গে সিলেটের ভোলাগঞ্জে ইউএনও-এসিল্যান্ডের উপর হামলাকারী কুখ্যাত সন্ত্রাসী
আলিম চক্র কোয়ারীর ইজারা বহির্ভূত ভাটরাই এলাকা খাবলে খাচ্ছে। অর্ধশত পেলোডার দিয়ে
বালু উত্তোলন ও বিক্রিতে যেন আলাদিনের চ্যারাগ হতে পেয়েছেন, অবৈধ উপায়ে শত কোটি টাকার
মালিক বনে গেছেন তিনি। আলিম উদ্দিনের এখন অবৈধ কামাইয়ে গড়েছেন নামে বেনামে সম্পদের
পাহাড়। তার কালো টাকা আর অবৈধ সম্পদের স্পর্শে আইন শৃঙ্খলা বাহিনি মুখে কুলুপ এটেছে।
প্রশাসনের নাকেরডগায় ইজারা বহির্ভূত ভাটরাইয়ে অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলনের মহাউৎসবে
মেতেছে সন্ত্রাসী আলিম চক্র।
গত
কয়েকদিন ধরে প্রায় অর্ধশত পেলোডার মেশিন ও শতাধিক নৌকা নামিয়ে দেয় ওই এলাকায়। পেলোডার
প্রতি ২ হাজার টাকা করে দৈনিক লক্ষাধিক টাকা আদায় করছে আলিম উদ্দিন ও তার সহযোগীরা
। আলিম উদ্দিনকে টাকা না দিলে বার ব্যবসায়ীদের কোন নৌকা ও পেলোডার ডুকতে দেয়না আশি
ও তার লোকজন।
ভোক্তভোগীরা
জানান, আলিম উদ্দিন ও তার লোকজন থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বালু উত্তোলনের
মৌখিক অনুমতি নিয়েছে এবং প্রতিদিন থানা ও প্রশাসনকে টাকা দিতে হয়,এমনটা প্রচার করে
বালু উত্তোলন ও টাকা আদায় করে চলেছে। ইজারা বহির্ভূত এলাকা থেকে আলিম চক্রের অবাঁধে
বালু উত্তেলনের ফলে এলাকায় বয়াবহ নদী ভাঙ্গনের আশংকা বিদ্যমান। অনেক বাড়িঘর স্কুল মাদ্রাসা
মসজিদ হুমকির মুখে।
অভিযোগে
প্রকাশ আলিমের সাথে স্থানীয় পুলিশের সখ্যতা থাকায় এলাকবাসী তার এই লুটপাটের প্রতিবাদ
করতে সাহস পান না। প্রতিবাদ করলে হামলা ও মামলা দিয়ে শায়েস্তা করার হুমকি দিয়ে থাকে
আলিম উদ্দিন ও তার চক্রের সদস্যরা । তবে বালু উত্তোলন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার
করেন তিনি।
এ
বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি কেএম নজরুল ইসলামের সাথে মুঠোফেনে জানতে চাইলে তিনি বলেন
ভাটরাই এলাকা ইজারা বহির্তূত। এ এলাকা থেকে বালু উত্তোলন ও চাঁদা আদায়ের কোন তথ্য আমার
কাছে নেই। অভিযোগ পাওয়া গেলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্ষের বক্তব্য নিতে তার সাথে মঙ্গলবার রাতে মুঠোফোনে যোগাযোগের
চেষ্টা করলে তিনি এ প্রতিবেদকের মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
কোম্পানাগঞ্জে পে-লোডার
থেকে চাঁদাবাজি:-
কোম্পানীগঞ্জ
উপজেলার কালাইরাগ নতুনবাজার এলাকায় নৌকায় বালু উত্তোলনকারী পে-লোডার মেশিনের চালক ও
মালিকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। একটি চক্র দিনে দুপুরে প্রতিটি পে-লোডার
মেশিন থেকে ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়
সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত কলাবাড়ি থেকে
কালাইরাগ নতুনবাজার পর্যন্ত এলাকায় নদীর তীরে ১৪২৭ বাংলা সনে প্রচুর পরিমাণে বালু নদী
থেকে উত্তোলন করে মজুদ করেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বালুগুলো বিক্রি কিংবা অন্যত্র সরানোর
আগেই নতুন বাংলা বছর চলে আসে। ১৪২৮ বাংলা সনে গেল বছরের প্রশাসন। সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের
অনুরোধের প্রেক্ষিতে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করলে আবারও ধলাই নদীর তীরে থাকা বালুর মজুদ
থেকে বালু পরিবহন শুরু হয়। নদী তীরের মজুদকৃত বালুর উচু টিলা থেকে নৌকা, ট্রাক ও ট্রাক্টরে
বালু নেওয়ার জন্য শ্রমিকের পরিবর্তে ব্যবহৃত করছে পে-লোডার মেশিন। বর্তমানে কলাবাড়ি
থেকে কালাইরাগ নতুনবাজার পর্যন্ত নদী তীরে ২০ থেকে ২৫টি পে লাভার মেশিন বালু অপসারণের
কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
নাম
প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, কলাবাড়ি এলাকার যুবলীগ নেতা আলীম
উদ্দিনের ম্যানেজার বাবুল ও শফিক প্রতিটি পে-লোডার মেশিনের মালিক ও চালকদের কাছ থেকে
১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা করে চাদা আদায় করছেন। প্রতিদিন পে লোডার মেশিন থেকে চাঁদাবাজির
মাধ্যমে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি।
এ
ব্যাপারে পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আলীম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। বাবুল ও শফিক নামে আমার কোনো ম্যানেজার নেই।
তিনি আরো বলেন, জানিনা কে বা কারা আপনাদের এসব খবর দেয়, মানুষ খেয়ে বাঁচতে পারছে না।
আপনারা এসব ছোটখাটো বিষয়ে লক্ষ্য দেন কেন। মানুষ খেয়ে বাঁচুক।
এ
ব্যাপারে বক্তব্যের জন্য কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমান আচার্য্য
ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম একাধিকবার কল দিলেও প্রতিবেদকের ফোন রিসিভ করেন
নি।