নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
স্বামীর
অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি ইভানা লায়লা চৌধুরী। প্রতিবাদ করায় বকাঝকা
করে শাশুড়ি ও স্বামী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ মাহমুদ হাসান রুম্মান। নিয়মিত ঘুমের ওষুধের
পাশাপাশি আত্মহত্যা ও বিষণ্নতা বাড়িয়ে দেওয়ার ওষুধ খাওয়ানো হতো ইভানাকে। '১৫ সেপ্টেম্বর
মারা যাওয়া কি এত সোজা' বলে বকাঝকা করার কয়েক ঘণ্টা পরই ইভানার লাশ পাওয়া যায়। মৃত্যুর
১০ দিন পর ইভানার স্বামী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ মাহমুদ হাসান রুম্মান, তাঁর প্রেমিকা
ব্যারিস্টার সানজানা ইয়াসিন খান ও অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হককে আসামি করে মামলার আবেদন
করা হয়েছে।
শুক্রবার
সন্ধ্যায় ইভানার বাবা এ এস এম আমান উল্লাহ চৌধুরী বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় এজাহার দাখিল
করেন। ইভানার দুলাভাই ও মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. সরোয়ার হোসেন তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
শাহবাগ
থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ইভানার মৃত্যুতে একটা অপমৃত্যু মামলা
দায়ের করা আছে। এখন তাঁর বাবা একটা মামলার এজাহার নিয়ে এসেছেন। আমরা তদন্ত করে দেখছি।
ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী অপমৃত্যু
মামলাটি নিয়মিত মামলায় রূপান্তর হতে পারে।
গত
১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শাহবাগের পরীবাগে নবাব হাবিবুল্লা রোডের ২ /ক/ ১৪ নম্বর ভবন
ও পাশের ভবনের মাঝে ইভানার রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। তিনি রাজধানীর পরীবাগে ইংরেজি মাধ্যম
স্কুল স্কলাস্টিকার ক্যারিয়ার গাইডেন্স কাউন্সিলর ছিলেন।
ইভানার
স্বজনরা জানান, ইভানার স্বামী আব্দুল্লাহ মাহমুদ হাসান রুম্মানের সঙ্গে ব্যারিস্টার
সানজানা ইয়াসিন খানের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন
ইভানা। ইভানা ও স্বামীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। রুম্মানের অনৈতিক সম্পর্কের প্রতিবাদ
করায় ইভানা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। ইভানাকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া
হয়। অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক একজন কিডনি বিশেষজ্ঞ হয়েও ইভানাকে ‘মানসিক রোগের’
প্রেসক্রিপশন দেন। যার ফলে ইভানার আত্মহত্যা ও বিষণ্নতা বেড়ে যায়।
মামলার
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন-বিয়ের শুরুতেই ইভানাকে রুম্মান শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন
করত। কিছুদিন আগে ইভানা জানতে পারে যে, ব্যারিস্টার সানজানা ইয়াসিন খানের সঙ্গে পরকীয়া
প্রেমে লিপ্ত তাঁর স্বামী। ইভানা তাঁর স্বামী রুম্মান ও সানজানার মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপে
প্রেমালাপ এর প্রমাণ পায় এবং তাঁর স্ক্রিনশট তুলে তাঁর বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীদের কাছে
মেসেঞ্জারে পাঠায়। ইভানা আরও জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে রুম্মান ইভানাকে ঘুমের ওষুধ খাওয়াচ্ছিল
যাতে রুম্মান নির্বিঘ্নে সানাজানার সঙ্গে ফোনে প্রেমালাপ করতে পারে।