ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে এক কৃষকের তিনটি গরু ধরে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মৌলভীবাজারের বড়লেখার কুমারশাইল সীমান্তে শুক্রবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
দেড় মাস আগেও একই এলাকায় অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে আরেক কৃষকের একটি গরু ধরে নিয়ে যান ভারতীয় নাগরিকরা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুক্রবার বিকালে উপজেলার কুমারশাইল গ্রামের কৃষক আব্দুল করিম কুমারশাইল চা বাগানের নম্বরে গরু চরাচ্ছিলেন। চা গাছের ফাঁকে ফাঁকে গরুগুলো ঘাস খাচ্ছিল। সন্ধ্যা নামার আগেই হঠাৎ কয়েকজন অস্ত্রধারী বিএসএফ সদস্য সীমান্ত অতিক্রম করে চা বাগানে ঢুকে তিনটি গরু ধরে নিয়ে যায়। গরুগুলো সামনের দিকে এগোতে না চাইলেও তারা মেরে এগিয়ে নেন। গরুর মালিক কৃষক আব্দুল করিম দূরে আড়াল থেকে তা দেখেও ভয়ে প্রতিবাদ করেননি।
কৃষক আব্দুল করিম জানান, বাগানের ভেতর তিনি গরুগুলোকে ঘাস খাওয়াচ্ছিলেন। হঠাৎ কয়েকজন বিএসএফ সদস্য আমাদের এরিয়ায় ঢুকে পড়ে। আমি ভয়ে আড়ালে চলে যাই। তারা আমার তিনটি বড় গরু ধরে নিয়ে যায়। কী কারণে বিএসএফ আমার গরুগুলো নিয়ে গেল তা বুঝতে পারছি না। ঘটনাটি আমি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি বিজিবিকে জানান।
এর আগে গত ২৫ জুলাই সীমান্তের একই এলাকার কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ৫-৬ জন ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে আব্দুল কাইয়ুমের নামের এক কৃষকের একটি বড় ষাঁড় ধরে নিয়ে যায়। এ সময় বাধা দিতে গেলে আব্দুল কাইযুমকে তারা পিটিয়ে আহত করে।
উত্তর শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ জানান, কৃষক আব্দুল করিম তার তিনটি গরু বিএসএফ ধরে নিয়ে যাওয়ার কথা তাকে বলেন। তিনি তাৎক্ষণিক লাতু বিজিবি ক্যাম্পের ইনচার্জকে ঘটনাটি জানান। প্রায় দেড় মাস আগে একই এলাকার আব্দুল কাইয়ুম নামে এক ব্যক্তির একটি বড় ষাঁড় ভারতীয়রা সীমান্ত অতিক্রম করে আমাদের দেশে ঢুকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। বাধা দিতে গিয়ে ষাড়ের মালিক আহত হন। এ ষাঁড়টিও বিজিবি এখনো উদ্ধার করে দিতে পারেনি।
বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের লাতু ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার আব্দুল খালেক জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিএসএফ কর্তৃক তিনটি গরু ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছেন। তিনি বিএসএফের কাছে নোট পাঠিয়ে গরুগুলো ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা তা অস্বীকার করছে। বিষয়টি এখন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দেখা হচ্ছে। এর আগে ভারতীয় নাগরিকরা জোরপূর্বক বাংলাদেশি নাগরিকের গরু ধরে নেওয়ার বিষয়টিও বিএসএফ অস্বীকার করেছে।