ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
কুমিল্লায়
স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগে ক্ষোভে-অভিমানে যুবলীগ কর্মীর আত্মহত্যা। এই ঘটনায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে
থানায় প্ররোচনার মামলা।
জানা
যায়, টানা প্রায় ৮
বছরের প্রেমের সম্পর্ক থেকে অনেকটা পরিবারের
অমতেই বিয়ে করেন এমরান
হোসেন মুন্না ও সৈয়দা সাজিয়া
শারমিন উষা। তারপর এক
বছর না যেতেই তাদের
দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে অশান্তির
পদধ্বনি। স্ত্রী উষা ঢাকায় পড়াশোনার
সুবাদে জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায়। নানাভাবে
চেষ্টা করেও স্ত্রীকে পরকীয়া
সম্পর্ক থেকে ফিরাতে না
পেরে অবশেষে ক্ষোভে-অভিমানে আত্মহত্যা করে এমরান হোসেন
মুন্না (২৯)। এ
ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে
কোতোয়ালি মডেল থানায় পুত্রবধূ
স্ত্রী সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষার (২৮) বিরুদ্ধে আত্মহত্যা
প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন
মুন্নার বাবা মতিউর রহমান।
নিহত মুন্না মহানগর যুবলীগের একজন সক্রিয় কর্মী
ছিলেন।
স্থানীয়
ও মামলা সূত্রে জানা যায়, শহরতলীর
বারপাড়া এলাকার মো. মতিউর রহমানের
পুত্র এমরান হোসেন মুন্না। লাকসামের রাজাপুর এলাকার খিলা বাজার গ্রামের
সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের কন্যা সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষা। একসময় কুমিল্লা
কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট (বর্তমানে সরকারি সিটি কলেজ) এ
শিক্ষার্থী ছিল মুন্না ও
উষা। দুজন এক বছরের
সিনিয়র-জুনিয়র। কলেজজীবনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দুজন। প্রেমের
সম্পর্ক থেকে ২০১৮ সালের
২৫ জানুয়ারি তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের
বছর খানিক পর থেকেই তাদের
পারিবারিক জীবনে টানাপোড়েন শুরু হয়। উষা
ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুবাদে বেশির ভাগ সময় ঢাকায়
থাকত আর মুন্না প্রথমে
কুমিল্লায় একটি প্রাইভেট কোম্পানি
চাকরি করলেও পরে চাকরি ছেড়ে
কুমিল্লায় ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করে। দিনদিন
তাদের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরে।
মুন্নার
পরিবারের অভিযোগ, উষা ঢাকায় সোহেল
নামের এক ছেলের সঙ্গে
পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে মুন্নাকে বিভিন্ন
ভাবে মানসিক নির্যাতন করত। চাহিদা মতো
টাকা দিতে না পারার
অজুহাতে মরে যাওয়া কথা
বলে কটাক্ষ করত। এতে মানসিকভাবে
মুন্না ভেঙে পড়ে। গত
বুধবার সে আত্মহত্যার প্রস্তুতি
নিয়ে স্ত্রীকে ছবি পাঠায় এবং
ম্যাসেজ করে। কিন্তু স্ত্রী
উষা এতে কর্ণপাত করেনি।
কাউকে জানায়নি। বরং উল্টো উসকানিমূলক
কথাবার্তা বলেন। এতে মুন্না ক্ষোভে
নিজ শোবার ঘরে সিলিং ফ্যানের
সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা
করে। পরিবারের লোকজন আওয়াজ পেয়ে দরজা ভেঙে
তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার
পথে মৃত্যু ঘটে।
ময়নাতদন্ত
শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ যোহর গুধির
পুকুরপাড় ঈদগাহ ময়দানে এমরান হোসাইন মুন্না জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বক্তব্য
রাখেন কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্যানেল
চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী
যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল্লা আল মাহমুদ সহিদ,
মহানগর যুবলীগের সদস্য নাজমুল ইসলাম শাওন, ইমদাদুল হক চৌধুরী বাবুসহ
বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনে নেতৃবৃন্দ।
কুমিল্লা
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি
আনোয়ারুল আজিম বলেন, নিহতের
পরিবার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত
করে দেখছি।