হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার শঙ্করপুর প্রকাশিত সাইছা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর পত্র সুয়েব চৌধুরীকে (৩২) প্রকাশ্য-দিবালোকে কুপিয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মামলায় অভিযুক্ত মোনশেদ মিয়া (৩৬) নামে একজনকে আটক করেছে র্যাব ৯ এর আভিযানিক দল। আটক মেনশেদ মিয়া শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে র্যাব ৯ এর হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে মোনশেদকে আটক করেন। আটক মোনশেদ(৩৬) বানিয়াচং উপজেলার পুকড়া ইউনিয়নের দৌলতপুর এলাকার শওকত আলীর পুত্র।
গত ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে মোনশেদ আলীসহ একদল লোক অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে কুপিয়ে সুয়েবকে ক্ষতবিক্ষত করে পালিয়ে যায় খুনিরা। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাহুবল পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় নিহতর মা রহিমা চৌধুরী বাদী হয়ে বাহুবল মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, উপজেলার সাতকাপন ইউনিয়নের শঙ্করপুর প্রকাশিত সাইছা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর মৃত্যুর পর থেকে তার বিষয়-সম্পত্তি জোরপুর্বক দখলের পাঁয়তারা করে আসছিল মোনশেদসহ একটি প্রভাবশালী ভুমি খেকো চক্র।
ওই চক্রের ভয়ে ও অহেতুক ঝামেলা এড়াতে বাহুবল সদরের হামিদ নগরে বসবাস করে আসছিলেন মৃত কাইয়ুম চৌধুরীর পরিবারের লোকজন। তারপরও স¤প্রতি ওই চক্রের অপতৎপরতা চরম আকার ধারণ করে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সাইছা গ্রামের নিজ বসতভিটায় যান মৃত কাইয়ুম চৌধুরীর একমাত্র পুত্র আবুল খায়ের চৌধুরী শোয়েব ৷ শোয়েব যখন পুকুরের ঘাটে অজু করছিলেন ঠিক তখনি পুর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মোনশেদসহ হামলাকারীরা দলবদ্ধ হয়ে তার উপর অতর্কিত আক্রমন চালায়।
এ সময় হামলাকারীদের ধারালো দা'য়ের কোপে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শোয়েব। এতেও ক্রান্ত হয়নি নিষ্ঠুরের দল। মৃত্যু নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ক্ষত-বিক্ষত শোয়েবকে সাপের মত নির্মমভাবে পেটাতে থাকে ঘাতকেরা। একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে জেনে পালিয়ে যায় তারা। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাহুবল উপজেলা হাসপাতাল এবং পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন নিহতের পুরুষশ‚ন্য পরিবার। মামলার বাদী নিহতের মা রহিমা চৌধুরী অভিযোগ করে জানান, আসামিরা তাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে এবং হত্যার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নানারকম অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি সরকার ও প্রশাসের কাছে খুনীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এদিকে বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকতা এসআই মোকসেদ ঘটনারস্থল পরিদর্শন করে আসামীদের বাড়ি থেকে হত্যায় ব্যবহ্নত রক্তমাখা ছুরা, লোহার রড, বটি ও দাসহ গুরুত্বপূর্ণ আলমত উদ্ধার করেন। তিনি বলেন, অন্যনান্য আসামীদের গ্রেফতার ও গ্রেফতারকৃত আসামী মোনসেদের রিমান্ড আবেদন করা হবে।