Can't found in the image content.
মোস্তাকিম হোসেন, পাঁচবিবি প্রতিনিধি | আপডেট: শনিবার, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২২
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি হাটবাজার গুলো উঠতে শুরু করেছে পাট। বাজারে পাটের দাম আশানুরুপ হলেও চলতি মৌসুমে পাট কর্তন,জাগ দেওয়া ও আঁশ ছড়ানোর শ্রমিক মজুরী বৃদ্ধি হওয়ায় খুব একটা লাভবান হচ্ছে না এ উপজেলার কৃষকের। বর্তমানে মণপ্রতি পাট বিক্রি হচ্ছে ২৬শ থেকে ২৮শ টাকায়। গত বছর ছিল ৩ হাজার থেকে ২৪০০ শ টাকা। শুরুতেই পাটের দাম ভালো না হওয়ায় কৃষকের মাঝে দেখা দিয়েছে দুচিন্তা।পাঁচবিবি বাজারে দেখা গেছে,দুর-দুরান্ত থেকে ভ্যানে করে নতুন পাট নিয়ে আসছেন কৃষকরা।ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দর কষাকষি চলছে। এখন হাট বাজারে পাটের আমদানি বাড়তে শুরু করেছে।সেই সঙ্গে পাটকলগুলোতে বেড়েছে পাটের চাহিদা।কিন্তুু সে অনুযায়ী পাটের ভালো দাম পাচ্ছে না কৃষকেরা।
ধরঞ্জী
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন,আমি দশ বিঘা জমিতে
পাট চাষ করেছি।এবারে ফলন বেশ ভাল হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ৭-৮ মণ
করে পাটের ফলন হয়েছে।
সুলতানপুর
গ্রামের পাটচাষী মোহন রায় বলেন,আমি ২৮ শ টাকা
দরে প্রতি মণ পাট পাঁচবিবি
বাজারে বিক্রি
করেছেন।তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে
ও এবার মণ প্রতি ২/৩শ টাকা করে
কম বিক্রি হচ্ছে।এবার পানি সংকটের কারণে জমি থেকে পাট কেটে অন্যত্র জাগ দিতে হয়েছে। আবার কর্তন ও আঁশ ছড়ানোর
খরচও এবছর বেশি। এতে অনেক খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে।
শ্রীমন্তপুর
গ্রামের কৃষক ফারায়েজ হোসেন বলেন,অন্যান্য বছর প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষে ১৫ হাজার টাকা
খরচ হতো।এ বছর প্রায় ২০/২২ হাজার
টাকা খরচ হয়েছে।একারণে এবার প্রতি বিঘা পাটে খরচ বাদ দিয়ে ৫/৭শ টাকা লাভ হবে।
উপজেলার
কড়িয়া মন্ডলপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব নুরুল আমিন মন্ডল জানান,আমি তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। কিছু পাট বাজারে ২৮শ টাকা মণ দরে পাট
বিক্রি করেছি।মৌসুমের শেষে যদি পাটের দাম আরো বাড়ে তাই বাকি পাট রেখে দিয়েছি।
বাগজানা
বাজার এলাকার মাধব বর্মন জানান,এবার শুরুতে পাট কাটার পর পঁচাতে গিয়ে
বিপাকে পড়তে হয়েছে। বর্ষাকালেও তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় খাল-বিল-পুকুরে পানি ছিল না।এর ফলে পাট জাগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছিল। মধ্য শ্রাবণের বৃষ্টিতে সেই সমস্যার কিছু সমাধান হয়েছে।অনেকে সেচ দিয়ে পাট জাগ দিয়েছেন।পাটের আঁশ ছাড়ানোর মজুরি বেশি হওয়ার পাটের আঁশ ছড়ানোর বিনিময়ে মজুরি হিসেবে পাটকাঠি শ্রমিকদের দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে
সব জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমিক মজুরীও বৃদ্ধি পেয়েছে।সে কারণে পাটের নূন্যতম দাম ৪ হাজার টাকা
করার দাবী জানিয়েছেন এ উপজেলার কৃষকেরা।
পাঁচবিবি
বাজারের পাটের আড়ৎদার সাত্তার হোসেন বলেন,কোচান পাট ভালোটা ২৮০০ টাকা ও টেবরা জাতের
পাট ২২০০ টাকা প্রতি মণ দরে বিক্রি
হচ্ছে।তবে পরবর্তীতে পাটের আমদানি বেশি হলে দাম কমতেও পারে বলে জানান তিনি।
পাঁচবিবি
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন,এবার পাঁচবিবি উপজেলায় ১৪৪০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুল থাকার ভাল ফলন পেয়েছেন কৃষকেরা। তবে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় ও
পাট জাগের জন্য জলাশয়ের অভাবে পাট জাগ দেওয়ায় বাড়তি খরচ হয়েছে। আশা করছি কৃষক পাটের দাম ভাল পেলে কৃষকের বাড়তি খরচ উঠে আসবে ও কৃষকেরা লাভবান
হবে বলে জানান তিনি।