বজ্রপাতে নিহত সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌরসভার শিবপুর গ্রামে শমসের আলীর পরিবারের ৫ জনকে একসঙ্গে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্বজন হারানোদের কান্না থামানো যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার বিকালে বজ্রপাতে উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের মাটিকোড়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের মাঠে একটি শ্যালোমেশিন ঘরের মধ্যে নিহত হন ৯ জন। আহত হন আরও ৪ জন।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে উল্লাপাড়া পৌরসভার শিবপুর গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয় কৃষি শ্রমিক শমসের আলীসহ তার পরিবারের সদস্য আফসার আলী, শাহিন, মোবাক্ষর ও মোন্নাফ আলীকে। একই সময় মাটিকোড়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের নিহত আব্দুল কুদ্দুস, শাহ আলম, রিতু খাতুন ও জান্নাতী নদীকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ সময় উভয় গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বজ্রপাতের ঘটনার আগে নিহত ও আহতরা সবাই মাঠে রোপা ধানের চারা উত্তোলন ও রোপণের কাজ করছিলেন। আকস্মিকভাবে শুরু হয় বৃষ্টি। জীবন বাঁচাতে দৌড়ে গিয়ে সবাই আশ্রয় নেন মাঠে অবস্থিত একটি শ্যালোমেশিন ঘরে। কিছুক্ষণের মধ্যে আশ্রয়স্থলেই বজ্রপাতে মৃত্যু হয় তাদের। উল্লাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে উল্লাপাড়া ৩০ শয্যা হাসপাতাল ও সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
উপজেলার শিবপুর গ্রামে শমসের আলীর পরিবারের ৫ জন মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। শুক্রবার শমসের আলীর বাড়িতে গেলে তার শোকাতুর স্ত্রী শান্তি খাতুন কান্না করে বলছেন, পরিবারের উপার্জনের লোক ছিল তার স্বামী শমসের আলী ও তার সন্তান শাহীন। দুজনই মারা গেলেন। এখন কীভাবে তার সংসার চলবে এটাই প্রশ্ন করছিলেন সবাইকে শান্তি খাতুন।
এদিকে এ দুর্ঘটনার পর উল্লাপাড়ার সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম নিহতদের পরিবারে গিয়ে তাদের সমবেদনা জানান। সেই সাথে পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. উজ্জ্বল হোসেন জানান, বজ্রপাতে নিহত প্রতিটি পরিবারকে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ ২৫ হাজার টাকা করে প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। দ্রুত উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এ টাকা পরিবারগুলোকে প্রদান করা হবে।