কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার মরিচ্যায় একটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে ২০২৩ সালের অগ্রিম করা ৪০টি বাল্যবিয়ের তথ্য পেয়েছে উপজেলা প্রশাসন। মরিচ্যা মধ্যম স্টেশনের পূর্বপাশে দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত কাজী আখতার হোসেনের অফিসে তল্লাশি চালালে এসব নথিপত্র পাওয়া যায়।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থানীয় এক সচেতন ব্যক্তি বাল্যবিয়ের খবরটি ৯৯৯ নম্বরে কল করে জানালে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল মাহমুদ হোসেন ও উপজেলা শিশুবিষয়ক সমাজকর্মী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে এ বিয়ে বন্ধ করেন হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী।
পরে কাজী আখতার হোসাইনকে আটক করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট নিয়ে গেলে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এই আকাতার হোসেন সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিবের আপন ভাইয়ের মেয়ের জামাই ও উখিয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান জাহাংগীর আলমের ভগ্নিপতি।
জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী আখতার হোসাইন হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মাতব্বরপাড়ার ছৈয়দুর রহমানের ছেলে। প্রকৃতপক্ষে তিনি রামু উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা যায়।
জানা গেছে, ১৮ বছর পূর্ণ হতে আরও তিন মাস বাকি হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের জামবাগান এলাকার আলী চানের মেয়ে হামিদা বেগমের। তাকে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল রামু উপজেলার খুনিয়া পালং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের টুয়াইংগাকাটা এলাকার ছৈয়দ আলমের ছেলে আব্দু শুক্কুরের সঙ্গে। মলূত তাদের বিয়ের তথ্য বের করতে গিয়েই আরও ৩৯টি এধরনের বিয়ের তথ্য উঠে আসে।
হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে মাঝপথ থেকে গ্রাম পুলিশদের দিয়ে বরযাত্রীসহ বিয়ের সজ্জিত গাড়ি আটক করে ইউনিয়ন পরিষদে আনা হয়।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল মাহমুদ হোসেন জানান, কাজী অফিস থেকে উদ্ধার করা ওই ৪০টি বিয়ের নিবন্ধিত নিকাহনামায় সময় উল্লেখ করা আছে ২০২৩ সাল। অথচ বিয়েগুলো সম্পন্ন হয়ে গেছে অনেক আগেই এবং তারা সংসারও করছেন।
মূলত কনে বা বরের বিয়ের বয়স পূর্ণ না হলে কাজী বেআইনিভাবে এ কাজ করেন। আর বন্ধ হওয়া বিয়েটি ওই তালিকার পঞ্চম বিয়ে বলে জানা যায়।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, কাজীকে জরিমানা করা হয়নি। তবে বিয়েটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।