ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের নামে অবৈধ ভাবে ২৫ কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি ভোগ দখলের অভিযোগ উঠেছে। জেলা প্রশাসক বরাবরে এ অভিযোগ দিয়েছেন ঝালকাঠি আওয়ামীলীগের সদস্য গিয়াস উদ্দিন খান।
গত ৩০ জুলাই এ অভিযোগ প্রদানের পর গত ১৫ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক (৩২০ স্মারকে) মতামত দাখিলের চিঠি প্রদান করেন। ৭ কার্য দিবসের মধ্যে প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক আক্কাস সিকদারকে এ মতামত দাখিল করতে বলা হয়েছে।এদিকে ২২ সেপ্টেম্বর ৭দিন অতিবাহিত হলেও জেলা প্রশাসনকে কোন সদুত্তোর না দিয়ে উক্ত বিতর্কিত সাংবাদিক আক্কাস ‘আওয়ামীলীগের চাপে জেলা প্রশাসন প্রেসক্লাবকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালাচ্ছে’ বলে ঢাকাসহ বিভিন্ন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের কাছে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে জানাগেছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ঝালকাঠি শহরের প্রায় ২৫ কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি প্রেসক্লাবের নামে কয়েকজনের একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধ ভাবে দখল করে রাখা হয়েছে। যাহার কোন মালিকানা দলিলও নেই এবং পাকা স্থাপনা ও ৮/১০টি বানিজ্যিক ষ্টল নির্মান করে পরিচালিত হলেও পৌরসভার অনুমোদিত প্লান নেই।
প্রায় ১০বছরের বেশী সময় ধরে বিএনপি নেতা আক্কাস সিকদার ক্লাবের সাধারন সম্পাতক পদে থেকে এঅবৈধ সম্পত্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছে। বর্তমান সরকারের বিরোধী অধিকাংশ সদস্যকে নিয়ে আক্কাস এখানে তার অনুগতদের সদস্য করে প্রতিষ্ঠানটিকে বিএনপির একটি মিনি অফিসে পরিনত করেছে। এখানে বিভিন্ন সময় গভীর রাতে সরকার বিরোধী গোপন বৈঠক করা হয়।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী ঝালকাঠিতে কর্মরত অনেক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা এখানে সদস্য হতে পারেনা। এ ক্লাবটি সাংবাদিকদের কল্যানে কাজ না করে বিএনপি পন্থি কিছু সাংবাদিকদের নিয়ে কাজ করছে। যে কারনে সংগঠনটিতে আক্কাস ও তার অনুসারিরা সকল সুবিধা ভোগ করলেও সাধারন সাংবাদিকরা বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে।
তাই অবৈধ ভাবে ভোগ দখল করা এ সম্পত্তি দখল ও সিন্ডিকেট মুক্ত করার পাশাপাশি আক্কাস সিকদারের কবল হতে ক্লাবটিকে উদ্দার করে সকল সাংবাদিকদের কল্যানে উম্মুক্ত করে দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, প্রেসক্লাবের সেক্রেটারী আক্কাস সিকদার তার ফেসবুকে সম্প্রতি বর্তমান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সেতু মন্ত্রীদ্বয়ের বিরুদ্ধে মানহানিকর মন্তব্য করে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করেছে। পাশাপাশি ঝালকাঠি-২ আসনে সরকার বিরোধী অপ্রচারের মাধ্যমে বিশৃংখলা সৃষ্টির পায়তারা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আক্কাস সিকদারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে সে কিছু দিন পালিয়ে থাকার পর উচ্চ আদালত থেকে আত্মসমর্পনের নির্দেশনা নিয়ে এলাকায় ফিরেছে।
উচ্চ আদালত তাকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পন করতে নির্দেশ দিলে এখন সে নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেতে একদিকে জেলা আওয়ামীলীগ ও আওয়ামীপন্থি আইনজীবী নেতাদের স্বরনাপন্ন হয়ে চেষ্ঠা তদবীর চালাচ্ছে। অন্যদিকে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার পায়তারা করছে বলে জানাগেছে।
পাশাপাশি আক্কাস সিকদারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই পৃথক আরেকটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পিবিআই আদালতে চার্জশীট প্রদান করেছে। বিভিন্ন সময় তার ফেসবুকে সরকারের পুলিশ বাহিনী ও জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অপপ্রচারের তথ্যপ্রমান রয়েছে। তাই ঝালকাঠির সাংবাদিক সমাজ ও সচেতন মহল তার সম্পর্কে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছে।