শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়ে খুশি বরিশালের ব্যবসায়ীরা। এরইমধ্যে বরিশাল থেকে প্রথম চালানে সাত টন এবং দ্বিতীয় চালানে দশ টন সর্বমোট সতের টন ইলিশ পাঠানো হয়েছে।
বরিশাল মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় এ নিয়ে একটানা চার বছর ধরে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। যেখানে সুযোগ আমরাও পেয়েছি। সারা বাংলাদেশে ৪৯ জন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে ৫০ মেট্রিক টন করে মোট দুই হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবার। যেখানে বরিশালের চারজন ব্যবসায়ী ইলিশ পাঠানোর অনুমতি পেয়েছে।
তিনি বলেন, এরইমধ্যে গত সোমবার প্রথম চালানে দুটি ট্রাকে সাত টন এবং দ্বিতীয় চালানে মঙ্গলবার রাতে আরও ১০ টন ইলিশ পাঠানো হয়েছে।
এতে বরিশালের বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েক হাজার শ্রমিকের মধ্যে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে জানিয়ে টুটুল বলেন, বর্তমানে ভারতের বাজারে ভারতীয় জেলেদের ইলিশের চাপ রয়েছে। তারপরও স্বাদ ও আকারের কারণে আমাদের দেশের ইলিশের দাম ভালো পাওয়া যাবে সেখানে।
বরিশালের রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান মাহিমা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নীরব হোসেন টুটুল জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরিশাল থেকে চার জন ব্যবসায়ীকে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। তারা দুই হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করবেন।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সরকারের নানা উদ্যোগের কারণে আজ দেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। মৎস্য অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত ইলিশের ওপর কাজ করে যাচ্ছে। এর সুফল জেলে থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পাওয়া যাচ্ছে। আর দেশ থেকে ইলিশ রপ্তানির কারণে জেলে থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী পর্যন্ত সবাই লাভবান হবেন।
তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরিশাল থেকে ২ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-২ শাখার উপ-সচিব তানিয়া ইসলাম স্বাক্ষরিত এক স্মারকে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানির জন্য ৪৯ প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। শর্তসাপেক্ষে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে মোট দুই হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন মাছ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ইলিশ রপ্তানির শর্তে বলা হয়েছে, রপ্তানি নীতি ২০২১-২০২৪ এর বিধিবিধান অনুসরণ করতে হবে, শুল্ক কর্তৃপক্ষ দ্বারা রপ্তানি করা পণ্যের কায়িক পরীক্ষা করাতে হবে, প্রতিটি কনসাইনমেন্ট শেষে রপ্তানি সংক্রান্ত কাগজপত্র রপ্তানি-২ অধিশাখায় দাখিল করতে হবে, অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি ইলিশ পাঠানো যাবে না। এ অনুমতি আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
তবে সরকার মৎস্য আহরণ ও পরিবহনের ক্ষেত্রে কোনোরূপ বিধিনিষেধ আরোপ করলে তা কার্যকর করার সঙ্গে সঙ্গে এ অনুমতির মেয়াদ শেষ হবে।