রাঙামাটিতে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বাতিলসহ সাত দফা দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের ডাকা ৩২ ঘণ্টার হরতালে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে। কোথায় কোনো অপ্রীতিকর খবর পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলাবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে হরতালের সমর্থনে পিকেটিং করতে দেখা গেছে। এ সময় তারা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করে।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। হরতাল সমর্থনে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা প্রদান করে।
যারাই জরুরি কাজে বের হয়েছেন তাদের পায়ে হেটেই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। হরতালের কারণে শহরের একমাত্র গণপরিবহণ অটোরিকশা (সিএনজি) বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে সাধারণ মানুষ। শহরের সঙ্গে আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলার সঙ্গে উপজেলাগুলোর লঞ্চ চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী মুজিবুর রহমান বলেন, এই ভূমি কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের ভূমি অধিকার কেড়ে নিতে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা কমিশনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনো সমাধান হয়নি। তাই আমরা হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে ভূমি কমিশন সংশোধন করা হয়, সেখানে ৭ সদস্যরের মধ্যে ৫ জনই পাহাড়িরা। এতে পার্বত্য অঞ্চলের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী বাঙালির কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এই আইনে আপিল করার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। যার ফলে এই অঞ্চলের মানুষ ভূমি হারাবে।
রাঙামাটি কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক মো. আশরাফ হোসেন জানান, সকাল থেকে এই পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল চলছে। গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাঙামাটিতে ভূমি কমিশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে পার্বত্য ভূমি নিষ্পত্তি কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের পর ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ২০০১ সালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি-বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন’ করে সরকার। আইনটি ২০১৬ সালে সংশোধন করা হয়। কিন্তু আইন সংশোধনের পর কমিশনের বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়নি। এই অবস্থায় থমকে আছে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির কাজ। আইনটি সংশোধনের পর কমিশন
কাজ শুরু করে এবং বিরোধপূর্ণ জমির মালিকদের কাছে দরখাস্ত আহ্বান করে। কিন্তু বিধিমালা প্রণয়ন না হওয়ায় কাজে হাত দিতে পারেনি কমিশন। এরপর আসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। স্থবির হয়ে পড়ে তিন পার্বত্য জেলার ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির কাজ।