সিরাজগঞ্জে শিক্ষা সফরে গিয়ে গানের তালে একসঙ্গে নেচেছেন একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি ও স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম। এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (২ সেম্টেম্বর) সকালে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোমবার (২৯ আগস্ট) জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার লাহিড়ী মোহনপুর ইউনিয়নের এলংজানী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ প্রায় আড়াইশ জন পাঁচটি নৌকায় করে এলংজানী থেকে শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাচারি বাড়ী ও পাবনার বেড়ার পাওয়ার প্লান্টে যান। নৌকায় চলার সময় সাউন্ড বক্সে উচ্চস্বরে গান বাজানো হয়। এ সময় গানের তালে তালে নাচতে শুরু করেন প্রধান শিক্ষক, মসজিদের ইমাম ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ অন্যরা।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, এলংজানী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস আলম, বিদ্যালয়ের সভাপতি আউয়াল সরকার এবং এলংজানী দাখিল মাদরাসার দপ্তরি ও কায়েমকোলা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা নুরুল ইসলাম গানের তালে নাচছেন। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন বিদ্যালয়টির সাবেক সভাপতি আব্দুল আল মামুন, সহকারী শিক্ষক শাহাজাহান এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিরুল ইসলাম।
এ ঘটনার পর শিক্ষক-অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এলংজানী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও গোনাইগাঁতী গ্রামের বাসিন্দা ইমরান হোসেন বলেন, ‘শিক্ষা সফরের নামে গানের সঙ্গে শিক্ষক, মসজিদের ইমাম ও ম্যানেজিং কমিটি সভাপতির এমন উদ্দাম নাচ কোনো সভ্য সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে না। এতে বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক শালীনতা লঙ্ঘন করেছেন। মসজিদের ইমাম হয়ে নাচে অংশ নিয়ে তিনিও ইসলামের নিয়ম-কানুন লঙ্ঘন করেছেন।’
এ বিষয়ে এলংজানী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষা সফরে গেলে তো একটু আনন্দ হবেই। একটি মহল আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এসব ভিডিও ভাইরাল করেছে।’
তবে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বিদ্যালয়ের সভাপতি আউয়াল সরকার এবং কায়েমকোলা জামে মসজিদের ইমাম নুরুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম শামসুল হক বলেন, এলংজানী উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষা সফরে যাওয়ার আগে কারও কাছ থেকে অনুমতি নেয়নি। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গানের সঙ্গে উদ্দাম নৃত্য আমি দেখেছি। তাদের এভাবে নাচানাচি করা ঠিক হয়নি। পরবর্তী সময়ে যেন এমন না হয় সে বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে সতর্ক করা হবে।