মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসতভিটা দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর সংবাদ সম্মেলনে এই দখলের পিছনে স্থানীয় এক প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতার মদদের অভিযোগ পাওয়া করা হয়েছে । বসতভিটা হারিয়ে বিভিন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে প্রতিকার না পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছে বলে জানান।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনে শ্রীমঙ্গল উপজেলার রামনগর গ্রামের মৃত ওয়াহ উল্লাহর স্ত্রী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আলম মিয়ার ছোট বোন মোছা. মনোয়ারা বেগম (৬০) এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, স্বামী মৃত্যুকালে ৪৩ শতক জায়গা রেখে গেছেন। ৫৬ রেকর্ডে এই জায়গা স্বামী ও ভাসুরের নাম রয়েছে। ভাসুর ২১.৫০ শতক জমি পান। বাকি ২১.৫০ শতক জায়গায় পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলাম। এর মধ্যে এলাকার মৃত বারেক মিয়ার পুত্র আবুল কালাম (৬০) প্রায় ১৩ বছর আগে আমাদের কাছে আশ্রয় প্রার্থণা করেন। সরল বিশ্বাসে তাকে আমাদের জায়গায় থাকার সুযোগ দেই।
আমার স্বামীর মৃত্যুর প্রায় ৫ বছর পর আশ্রিত আবুল কালাম দাবী করেন এই বাড়ি তার।
পরে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখি আমাদের নামে ২১.৫০ শতক জায়গার মধ্যে ১৫ শতক জমি আবুল কালামের নামে নামজারী পুর্বক রেকর্ড করা হয়েছে। মাত্র ৭ শতক জায়গা রেকর্ড আমাদের নামে রয়েছে। আমাদের উত্তরাধীকারীগনের কেউ আবুল কালামের কাছে কখনও জমি বিক্রি না করলেও আবুল কালাম বিভিন্ন সন ও তারিখ উল্লেখ ও মৃত ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে অন্যের এসএ ব্যবহার করে জমি রেকর্ড ও নামজারী করে। এরপর আবুল কালাম অবৈধ দখল বজায় রাখতে আমাদের ভয়ভীতি প্রদর্শণ ও হয়রানী করতে আমার ছেলে মেয়েদের উপর মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত করে আবুল কালামের জাল দলিল সনাক্ত হয় বলে তিনি দাবী করেন।
এছাড়া বিভিন্ন সময় ডিসি অফিস, ভূমি অফিস থেকে সার্ভেয়ার নিয়ে জমি মাপার চেষ্টা করলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ইউছুব আলী আবুল কালামের পক্ষ নিয়ে প্রভাব খাটিয়ে জায়গা মাপতে বাধা দেন।
সর্বশেষ ২০২১ সালের ১৭ ডিসেম্বর আবুল কালাম গং বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আমার বাকি ৭ শতক জায়গাও জোর করে দখলে নেয়। তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা বসতভিটা হারিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করছি।
মনোয়ারা বেগম কান্নাবিজরিত কণ্ঠে বলেন, আমার ভাই একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। সেই মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জায়গা দখল করে আবুল কালাম সেখানে কওমি মাদ্রাসা নির্মাণে কাজ করছেন। এজন্য তিনি প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
যোগাযোগ করা হলে আবুল কালাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলে, জমিটি ইতিপূর্বে ৫ বার বেচা-বিক্রি হয়, তিনি এই জমির ৫ম মালিকের কাছ থেকে খরিদ করেছেন।'
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ইউছুব আলী বলেন, '২০ বছর আগে বিষয়টি নিয়ে শালিস বসে। কিন্তু মনোয়ারা বেগম তা মানেননি। বর্তমানে বিষয়টি আদালতে বিচারাধিন রয়েছে'।