ব্যক্তিগত আয়োজনে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান করায় আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী আনোয়ার হোসেন সালেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সালেক মহানগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এদিকে শোক দিবসের ওই আয়োজনে অংশগ্রহণকারী ও আয়োজক অনেকেই এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা হয়েছে।
এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে শোক দিবসের মাসব্যাপী কর্মসূচির বাইরে দলের ব্যানার ব্যবহার করে কেউ শোক দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে তাদের আইনি ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বাসভবনে অনুষ্ঠিত জরুরি সভা থেকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন সজীব বলেন, ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনি আমার বন্ধু। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনে আমি একজন কাউন্সিলর প্রার্থী। এ বিষয়টি সে জেনে বিভিন্ন সময়ে চক্রান্ত করে আসছিল। আমরা যারা ওয়ার্ডে ত্যাগী আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ, আমরা রনির নেতৃত্ব মানি না। কারণ সে আওয়ামী লীগের হাইব্রিড নেতা। সে কোনোদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেনি।
তিনি বলেন, আমরা কয়েকজন মিলে ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট শহিদদের স্মরণে দোয়ার আয়োজন করি। রনি অনেকভাবে চেষ্টা করেছিলেন আয়োজন পন্ড করে দিতে। কিন্তু বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে আমরা দোয়ার আয়োজন করি। অনুষ্ঠান শেষ করে বাসায় এসে দেখি আমার বাসার সামনে পুলিশের গাড়ি। আমাকে বাসায় না পেয়ে তারা অনুষ্ঠানের আয়োজক ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সালেক ভাইয়ের বাসায় গিয়ে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, সারারাত বসিয়ে রেখে শনিবার বিকেলে কাউন্সিলর রনি লোকজন নিয়ে থানায় গিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করেছে বলে শুনেছি। এই অনুষ্ঠান আমরা নিজেদের টাকায় আয়োজন করেছি। আমারা কেফায়েত হোসেন রনির নেতৃত্ব মানি না; বিধায় মিথ্যা অভিযোগে চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
বিসিসির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। মামলার বাদী এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামীম খান জানান, অনুষ্ঠানের আয়োজক আনোয়ার হোসেন সালেকসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও অনেককে আসামি করে আমি থানায় মামলা করেছি। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছি।
কাউনিয়া থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, অনুষ্ঠান আয়োজনের নামে চাঁদা উত্তোলনের অভিযোগে শামীম খান নামে একজন বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলায় আনোয়ার হোসেন সালেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।