সবেমাত্র প্রথম-শ্রেণি পার করে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উঠেছে অলি উল্লাহ রহমান তালহা। কিন্তু এর মাঝেই তার বয়স ১০৭ পেরিয়েছে! সম্প্রতি এমনই এক অবাক ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলায়। তালহা ১১৭ নং তারাকান্দি হুসাইনীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। সে উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের মো. ফজলুল হকের ছোট ছেলে।
শিক্ষার্থীর পিতা ফজলুল হক জানান, ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই জন্মগ্রহণ করে তালহা। সে অনুযায়ী তার বর্তমান বয়স ৭ বছর ২৫ দিন। ইপিআই টিকাদান কার্ডেও জন্ম তারিখ লেখা আছে ৩০ জুলাই ২০১৫। কিন্তু জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র অনুযায়ী এখন তালহার বয়স হচ্ছে (৩০ জুলাই ১৯১৫) ১০৭ বছর ! অবিশ্বাস্য ভুলের এই ঘটনায় তার পরিবার ও এলাকাবাসী হতবাক।
এর আগে স্কুলে ভর্তির জন্য ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র আনেন তালহার বাবা মো. ফজলুল হক। তারপর স্কুল করোনার জন্য বন্ধ থাকায় বাড়ির কাছের তারাকান্দি জামিয়া হুসাইনীয়া আসআদুল উলুম কওমী মাদরাসার ক্যাডেট শাখায় প্রথম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছিল। তখন থেকেই আর কোনও কাজে ব্যবহার করা হয়নি জন্মসনদ পত্রটি। এ বছর প্রাথমিকের দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি ও উপবৃত্তির টাকা পেতে আবেদন করতে গেলে তালহার বয়সের ঘটনাটি ধরা পড়ে বলে জানান তার বাবা ফজলুল হক।
তবে পরবর্তীতে ভুলটিকে সংশোধনের চেষ্টা করেন বাবা ফজলুল হক। তবে ভুলের বিষয়টি সংশোধনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে গেলে বলা হয়, এটি দ্রুত সংশোধন করতে হলে আদালতে মামলা করার পরে সংশোধনের জন্য অনলাইনে ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করতে হবে। কিন্তু বয়স বেশি হওয়ায় অনলাইনে আবেদন নিচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে হতাশায় ভুগছে তালহার পরিবার। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্তদের ভুলের কারণে এরকম হয়েছে। এতে পরিবারটি খুবই হয়রানিতে পড়েছে।
জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শাহিন কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আমার যোগদানের আগের ঘটনা এটি। তবে যেভাবেই হোক এটি কোনো ছোটখাটো ভুল নয়। সনদপত্র টাইপের ভুলে হয়তো ঘটনাটি ঘটতে পারে। অতি দ্রুত বিষয়টি সংশোধনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।