জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের মধ্যম মহেশপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ ৪ বছরেও শুরু করা হয়নি। ধূর্ত প্রকৃতির ঠিকাদারের এমন গাফেলতিতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা।বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে চারতলা ভবনের কাজটি পায় মেসার্স হাজী এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার কবির শিকদার কাজ শুরু করার নামে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটির সিংহভাগ ভেঙে ফেলেন এবং পুকুরের মত বড় গর্ত করে মাটি উত্তোলন করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভেঙে ফেলা পুরাতন ভবন এর মালামাল ও গর্ত খুঁড়ে উত্তোলন করা মাটিতে স্কুল মাঠ ও হাঁটা-চলার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও বর্জ্য ও নতুন ভবন নির্মাণের মালামালের স্তূপের মধ্যে বিষধর সাপ বাসা বেধেছে। প্রায়ই বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পরা ছারাও লোকালয়ে বেরিয়ে পড়ছে বিষধর সাপ। এই ঘটনায় শিক্ষার্থী এবং অন্যান্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম।এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এফ,এম,মিজানুর রহমান জানান, আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অসহনীয় দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে বারবার ভবন নির্মাণের জন্য ঠিকাদারকে অনুরোধ করলেও তিনি কোনো কর্ণপাত করছেন না। এছাড়াও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উল্লেখিত প্রকল্পের পরিচালক মীর মোয়াজ্জেম হোসেনকে বিষয়টি বারবার অবহিত করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বাদশা নিজামী জানান, ২০১৮ সালের ১৬ আগস্ট স্থানিয় সংসদ সদস্য বেগম নাসরিন জাহান রতনা নতুন ভবন নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ। ঠিকাদার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেও কোন সুরাহা মেলেনি।বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের দুর্বিষহ ভোগান্তির কথা। চরম দুর্ভোগের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীরা জানান টিনের ছাউনির পাঠদান কক্ষে বর্ষা মৌসুমে পানির প্রকোপ এবং গ্রীষ্মের তাপদাহে আমাদের পাঠ গ্রহণ করা অসম্ভব হয়ে পরেছে। তারা আরো জানান, একদিকে ভবন নেই, বিদ্যুৎ নেই, বিশুদ্ধ পানির সংকট, নেই টয়লেট বাথরুম। অন্যদিকে পরিত্যক্ত ভবনের ফেলে রাখা বর্জ্যের স্তুপের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসা সাপের উৎপাতে রয়েছি প্রাণশঙ্কায়। সার্বিক পরিস্থিতিতে আমাদের শিক্ষা গ্রহন কার্যক্রম প্রায় বন্ধের উপক্রম।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকমল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমাদের দাপ্তর সংশ্লিষ্ট নয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বধিকারী কবির শিকদারের সাথে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।