দফায় দফায় বৈঠকেও চা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মালিকপক্ষ আংশিক বৃদ্ধি করতে চাইলেও শ্রমিকরা ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে অনড় রয়েছেন। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবারও (১৮ আগস্ট) আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন চা শ্রমিকরা। বাগানে বাগানে করছেন বিক্ষোভ মিছিল ও কর্মবিরতি। কোথাও কোথাও মহাসড়ক অবরোধও করছেন তারা।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সুরমা ও তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের কয়েকশ শ্রমিক ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। দুপুর ২টা থেকে তারা মহাসড়কের জগদীসপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে অবস্থান নেন।
খবর পেয়ে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন ও চুনারুঘাট মাধবপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসিন আল মুরাদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে চা-শ্রমিকদের সান্ত্বনা দেন এবং তাদের দাবি প্রধানমন্ত্রী বরাবর জানানোর আশ্বাস দেন। পৌনে ১ ঘণ্টা পর চা-শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ তুলে নেন। অবরোধকালে মহাসড়কের উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে।
তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি খোকন তাঁতী বলেন, আমরা চা শ্রমিকরা দীর্ঘদিন যাবত অবহেলিত। আমরা যে মজুরি পাই সেই মজুরি দিয়ে সংসার চালানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষিত করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এছাড়া দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জীবনমান কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আমাদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবি একটি ন্যায্য দাবি।
লস্করপুর চা-ভ্যালির সভাপতি রবিন্দ্র গৌড় বলেন, সুরমা ও তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের শ্রমিকরা সকালে নিজ নিজ চা বাগানে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। একপর্যায়ে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা নিজ নিজ উদ্যোগে জগদীসপুর পয়েন্টে এসে মহাসড়ক অবরোধ করেন।
তিনি বলেন, প্রশাসনের আশ্বাসে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া হলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
এ বিষয়ে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল জানান, বুধবার তারা শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও চা সংসদ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু তাতে কোনো সমাধান হয়নি। মালিকপক্ষ ২০ টাকা বাড়িয়ে ১৪০ টাকা দৈনিক মজুরি দিতে চাচ্ছেন। তারা তা মানেননি। তাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।