নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: সোমবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২১
কুমিল্লার
হোমনায় বিয়েবাড়িতে ছবি তোলাকে কেন্দ্র
করে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ ২৪ জন আহত
হয়েছেন। রোববার উপজেলার ঘাড়মোড়া বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা
ঘটেছে।
সংঘর্ষের
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় উত্তেজনা
বিরাজ করছে। বর্তমানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
উভয়পক্ষের
আহতরা হলেন- রাজিব মিয়া, শাহ আলম, জিলানী,
অজিত, শাহ আলম, নজরুল
মিয়া, কবির হোসেন, ইকবাল
মিয়া, আশাবুদ্দিন, ইকবাল হোসেন, কেটা মায়া, আজগর
আলী, সানাউল্লাহ, আরিফ, শুভ, জিলানী, জুয়েল,
তানভীর, সাইদুল, মোমেন, বাদশা মিয়া, হৃদয়সহ ২৪ জন। এদের
মধ্যে রাজিব মিয়া ও শাহ
আলম, আলী আকবর, সাব
মিয়া, শুভ ও মোমেন
মারাত্মক আহত। তাদের কুমিল্লা
মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী
সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার
বড় ঘাড়মোড়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের বাকপ্রতিবন্ধী মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়
উপজেলার বাগমারা গ্রামের এক ছেলের সঙ্গে।
শুক্রবার বিয়ের দিন নির্ধারিত হয়।
গত বৃহস্পতিবার গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে ডিজে মিউজিক চলার
সময় রাতে পাশের ফজুরকান্দি
গ্রামের রাসেল ইমরান, অন্তরসহ ৮-৯ জন
ছেলে গিয়ে মেয়েদের ছবি
উঠাতে থাকে। এ সময় বড়
ঘাড়মোড়া গ্রামের কয়জন ছেলে এসব
ছবি ডিলিট করতে বললে এ
নিয়ে এদের মধ্যে কথাকাটাকাটি
ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এর
জের ধরে শনিবার সকালে
বড় ঘাড়মোড়া গ্রামের মো. সাব মিয়া
বাজারে গেলে তার দুধ
মাথায় ঢেলে দিয়ে অপমান
করে এবং তাকে মারধর
করে হুজুরকান্দি গ্রামের কয়েকজন ছেলে। এ ঘটনায় সাব
মিয়ার ভাই জাহাঙ্গীর আলম
বাদী হয়ে হুজুরকান্দি গ্রামের
১৫ জনকে আসামি করে
থানায় একটি মামলা করেন।
পুলিশ হুজুরকান্দি গ্রামের বকুল নামের একজনকে
গ্রেফতার করে।
এ
নিয়ে দুই গ্রামের লোকজনের
মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। রোববার সকাল ৮টার দিকে
দুই গ্রামের লোকজন ঘাড়মোড়া বাজারে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায়
২৪ জন আহত হয়।
তাদের মধ্যে ১২ জনকে হাসপাতালে
ভর্তি করা হয়েছে বাকিদের
প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বড়
ঘাড়মোড়া গ্রামের আউয়াল মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার
হুজুরকান্দি গ্রামের কয়েকজন বখাটে ছেলে আমাদের বাড়িতে
এসে মেয়েদের ছবি ওঠায়। এসব
ছবি ডিলিট করা নিয়ে কথাকাটাকাটি
হয়। শনিবার বাজারে গেলে হুজুরকান্দি গ্রামের
লোকজন মো. সাব মিয়া
নামের একজন মুরুব্বিকে মারধর
করে। এ ঘটনায় থানায়
একটি মামলা হয়েছে।
তিনি
বলেন, আজ সকালে হুজুরকান্দি
গ্রামের লোকজন ইয়ারগানসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের গ্রামের
লোকজনের ওপর হামলা করে।
তাদের গুলিতে ১৫ জন আহত
হয়েছেন।
এদিকে
হুজুরকান্দি গ্রামের গোলাম মোস্তফা জানান, কিশোরদের মধ্যে সমস্যার ঘটনা আমরা মিটমাট
করার জন্য চেষ্টা করছিলাম।
এ সময় বড় ঘাড়মোড়া
গ্রামের লোকজন আমাদের গ্রামের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা
চালায়। এতে ১০-১২
জন আহত হয়েছেন। কোনো
গুলির ঘটনা ঘটেনি। এদের
ইটের আঘাতে আমাদের লোকজন আহত হয়েছেন।
ঘাড়মোড়া
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান মোল্লা
জানান, বৃহস্পতিবার বিয়েবাড়িতে ছবি তোলাকে কেন্দ্র
করে ছেলেদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে
গত শনিবার একজনকে মারার ঘটনায় থানায় মামলা হলে একজন গ্রেফতার
হয়। আজকে বিষয়টি মিটমাট
করার জন্য বসার কথা
ছিল। কিন্তু এর মধ্যেই ফজুরকান্দি
ও বড় ঘাড়মোড়া গ্রামবাসী
সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আমাদের নিয়ন্ত্রণের
বাইরে চলে যাওয়ায় থানায়
খবর দিলে পুলিশ এসে
নিয়ন্ত্রণ করে। পরিবেশ এখন
শান্ত রয়েছে।
হোমনা
থানার ওসি মো.আবুল
কায়েস আকন্দ জানান, বড় ঘাড়মোড়ায় একটি
বিয়েবাড়িতে ছবি তোলা নিয়ে
দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিবেশ
বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।