জোয়ার এবং টানা বৃষ্টির পানিতে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় অনেকটাই বিপর্যস্ত নদীবেষ্টিত বরিশাল তথা দক্ষিণ উপকূলের মানুষ। ব্যহত হচ্ছে স্বাভাবিক চলাফেরা।
অতি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের না হওয়ায় গতকাল রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা ছিলো। সড়ক ও নৌপথে চলাচলরত যানবাহনগুলোতেও নেই যাত্রীদের ভিড়।
আবহাওয়া অফিস বলছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে রবিবার সকাল থেকেই বরিশালে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে বরিশাল সহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে। কখনো মুষলধারে আবার কখনো মাঝারি ও হালকা বৃষ্টি হচ্ছে এ অঞ্চলে। সেই সঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বজ্রসহ আরও বৃষ্টিপাত হওয়ারও শঙ্কা রয়েছে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মাহফুজার রহমান জানান, রবিবার সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বরিশালে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিলো সর্বোচ্চ ১৮ কিলোমিটার।
তিনি জানান, বৈরি আবহাওয়ার কারণে বরিশাল অঞ্চলের নদী বন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুশিয়ারি সংকেত আর পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখানো হয়েছে।
এছাড়া বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি এবং এসব জায়গার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতারিত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সব নদ-নদীর পানি আজও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ নিয়ে টানা ৫ দিন ধরে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি জোয়ারের সময় বিপৎসীমা অতিক্রম করছে।
সেই সঙ্গে রবিবার সকাল থেকে বৃহত্তর মেঘনাসহ বেশিরভাগ নদী বেশ উত্তাল রয়েছে। উত্তাল মেঘনা নদী পাড়ি দিতে গিয়ে বেলা ১২ টার দিকে মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়া লঞ্চঘাট সংলগ্নে ৩২০ টন পাথরসহ একটি বাল্কহেড ডুবে গেছে।
তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে নিশ্চিত করেছে কোষ্টগার্ড।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, ভারী বৃষ্টি ও পূর্ণিমার প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বিশেষ করে রবিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিষখালী নদীর পাথরঘাটা ষ্টেশনে শনিবারের তুলনায় ২৫ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। আর ওই দিন পাথরঘাটার বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১ শত সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তাই পাথরঘাটার উজানের ষ্টেশনগুলোয় পানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে টানা বৃষ্টি ও নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে বরিশাল নগরের অধিকাংশ এলাকায় রাস্তা ঘাটে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। ফলে দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে নগরবাসী।