নির্ধারিত সময়ের ২০ দিন আগেই গতকাল বুধবার (২৭ জুলাই) থেকে দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোঃ সাইফুল ইসলাম সরকার।
টানা দুইমাস ২৭ দিন বন্ধ থাকার পর পরীক্ষামূলকভাবে এই কয়লা উত্তোলন শুরু হলো। ফলে কয়লা সংকটের কারণে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়া এবং উত্তরাঞ্চলে অতিরিক্ত লোডশেডিং হওয়ার যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল তা অনেকটাই কাটিয়ে উঠবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, গত (১ মে) খনির ১৩১০ নম্বর ফেইজ (কুপ) থেকে কয়লা উত্তোলন শেষ হলে,ওই কুপটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় । পরবর্তী সময়ে পরিত্যক্ত ফেইজ থেকে নতুন ফেইজে যন্ত্রপাতি স্থানান্তর ও সংস্কার কাজ শেষ করে আগস্টের মাঝামাঝি খনির নতুন ১৩০৬ নম্বর ফেইজ থেকে কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা নির্ধারিত সময়ের ২০ দিন আগেই গতকাল বুধবার পরিক্ষামুলকভাবে উৎপাদন শুরু করা হয়েছে।
এদিকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় নির্ধারিত হওয়ার বিপরীতে বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সেই সময় কয়লার মজুদ ছিল ৩৬ হাজার টন। যা দিয়ে আগষ্ট মাস পর্যন্ত চলার কথা নয়। ফলে কয়লার অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমে আসার শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। এতে উত্তরাঞ্চলে লোডশেডিং বেড়ে যেতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন।
অপরদিকে সূত্র মতে, সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অধিক জনবল নিয়োগের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ২০ দিন আগেই পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হলো বলে মন্তব্য করেন খনি কতৃপক্ষ । এমন খবরে কিছুটা হলেও স্বস্তি অনুভব করছেন এই অঞ্চলের মানুষ।
বিষয়টি নিয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোঃ সাইফুল ইসলাম সরকার আজকের পত্রিকাকে জানান,খনির পরিত্যক্ত ফেইজ থেকে নতুন ফেইজে যন্ত্রপাতি স্থানান্তর ও সংস্কার কাজের জন্য গত (১ মে) খনির ১৩১০ নম্বর ফেইজ (কুপ) থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অধিক জনবল নিয়োগের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ২০ দিন আগেই ১৩০৬ নম্বর নতুন ফেইজ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হলো। তিনি বলেন বুধবার সকালে পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান ভিডিও কনফান্সের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে এই কয়লা উৎপাদন উদ্বোধন করেছেন। তিনি আরো জানান পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে যন্ত্রাংশ এ্যডজাষ্টম্যান্ট সহ সকল প্রক্রিয়া শেষে পুরোপুরি উৎপাদনে যেতে প্রায় সপ্তাহ খানেক সময় লাগতে পারে। এরমধ্যে করোনার কিছু পাদুর্ভাব রয়েছে, এখানে গত দুই দিন আগে ৩৫জন শ্রমিকের করোনা পজেটিভ হয়েছিল। গত মঙ্গলবার ১৪৩জন শ্রমিকের নমুনা সংগ্রহ করে টেষ্ট করতে দেয়া হয়েছে,এদের রেজাল্ট আজকে আসবে এর উপরে নির্ভর করবে, আমরা কিভাবে কোনদিকে এগোবো। তিনি বলেন খনিতে বর্তমানে ৪০ হাজার টন কয়লা মজুদ রয়েছে । আশা করা যায় পুরোপুরি উৎপাদন চালু হলে প্রতিদিন ২৮শ থেকে ৩ হাজার টন কয়লা উৎপাদন করা সম্ভব হবে,এতে করে দেশের বিদুৎ খাতে যে জাতীয় ঘাড়তি তা কিছুটা কমে আসবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।