সুনামগঞ্জ ইব্রাহিমপুর গ্রামে কবরস্থান থেকে এক নবজাতক কন্যাশিশু উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটিকে উদ্ধারের পর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় ও পুলিশ সদস্যরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ইব্রাহিমপুর গ্রামের কবরস্থান থেকে হঠাৎ শিশুর কান্না ভেসে আসছিল। কান্নার আওয়াজ বাড়তে থাকলে আশপাশের বাসিন্দারা কৌতূহলবশত কবরস্থানে যান।
সেখানে একটি নবজাতককে দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধারের পর পুলিশে খবর দেন তারা। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
কবরস্থানের পাশের বাড়ির বাসিন্দা তাছলিমা আক্তার বলেন, হঠাৎ রাতে নবজাতকের কান্না কানে আসে। নবজাতকটি উচ্চস্বরে কাঁদছিল। কান্নার শব্দ শুনে গ্রামের আরও লোকজন জড়ো হন। এরপর সবাই নবজাতক কন্যাশিশুটিকে সেখান থেকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেন। পরে শিশুটিকে গোসল করানোর পর সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নবজাতকটিকে উদ্ধার করার পরপরই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের মা ও শিশু ওয়ার্ডে রাতে দায়িত্ব পালনকারী স্মৃতি আক্তার জানান, নবজাতক কন্যাশিশুটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক নারীর দুধ খাওয়ানো হচ্ছে তাকে।
এদিকে কবরস্থান থেকে উদ্ধার করা নবজাতক কন্যাশিশুটির দায়িত্ব নিতে আগ্রহ জানিয়েছেন স্থানীয় অনেকেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন বলেন, এই নবজাতকের দায়িত্ব নিতে আমি আগ্রহী। প্রয়োজনে শিশুটি আমার এবং আমার স্ত্রীর পরিচয়ে বড় হবে। শিশুটির জন্য যা যা প্রয়োজন সবই করতে আমি প্রস্তুত আছি।
তিনি বলেন, কে বা কারা এই নিষ্পাপ শিশুটিকে এভাবে কবরস্থানে ফেলে গেল- এ বিষয়টিও এলাকার মেম্বার হিসেবে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিচ্ছি।
শহরের আরেক বাসিন্দা পাঁচ সন্তানের জননী রাশেদা বেগমও শিশুটির দায়িত্ব নিতে আগ্রহী। তিনি বলেন, কেউ না নিলে আমি শিশুটিকে নেব। আমার পাঁচ সন্তানের সঙ্গে আরেক সন্তান বড় হবে।
সুনামগঞ্জ সদর থানার এএসআই সোহেল আহমদ যুগান্তরকে বলেন, খবর পেয়ে নবজাতককে বাঁচাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াসহ প্রয়োজনীয় সবকিছুতে সহায়তা করা হচ্ছে। নবজাতকের চিকিৎসা চলছে।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। শিশুটি কোথায় থাকবে, সে বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, উদ্ধার হওয়া শিশুটি বর্তমানে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আমরা ঘটনাটি স্থানীয় সমাজসেবা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। শিশুটিকে কার জিম্মায় দেওয়া হবে- এ সিদ্ধান্ত তারাই নেবে।