নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১
দীর্ঘ
দেড় বছর পর খুলে
দেওয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই নিয়ে খাগড়াছড়ির
রামগড়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মাঝে
একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলার
খুশিতে এবং প্রয়োজনে নতুন
ড্রেস বানানোর জন্য ভিড় করছেন
দরজি দোকানে। এতে হিমশিম খাচ্ছেন
দোকানিরা। এর আগে একসঙ্গে
এত ড্রেস সেলাইয়ের কাজ তাঁরা কখনো
পায়নি বলে জানিয়েছেন দরজিরা।
জানা
গেছে, স্কুল খোলার দুই দিন ফেরিয়ে
গেলেও প্রতিদিন ২০-২৫টি স্কুল
ড্রেস তৈরির অর্ডার পাচ্ছে দরজিরা। কাজের অতিরিক্ত চাপ থাকায় প্রত্যন্ত
এলাকাগুলো থেকে ঘরোয়া দরজিদের
চুক্তিভিত্তিক নিয়ে আসছেন দোকানিরা।
তবুও যথা সময়ে ক্রেতাদের
হাতে নতুন বানানো জামা
তুলে দিতে পারছেন না
তাঁরা।
উপজেলা
শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা
যায়, রামগড় উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৭টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫টি, কলেজ ১টি,
মাদ্রাসা ২টি রয়েছে। এ
ছাড়া কিন্ডারগার্টেন রয়েছে ৩টি, নুরানি মাদ্রাসা
১৪টি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রাথমিকে ৮ হাজার ১৪০
জনসহ মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা
প্রায় ১৬ হাজার ৫০০
জন।
সরেজমিনে
গিয়ে দেখা গেছে, রামগড়ের
আল-আমিন বস্ত্র বিতানে
রামগড় বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ড্রেস বানানোর জন্য ভিড় করছেন।
এ
সময় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাদিয়া সুলতানা বলেন, স্কুল বন্ধ থাকায় ড্রেস
অব্যবহৃত ছিল। ফলে ড্রেস
নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নতুন
করে বানাতে দিয়েছি। দোকানে অনেক ভিড় থাকায়
স্কুল খোলার আগে ড্রেসের মাপ
দিলেও এখনো হাতে পাইনি।
জামা
নিতে আসা দশম শ্রেণির
শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানার মা নাইমা রহমান
বলেন, স্কুল খোলায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত।
সে খুশিতে মেয়েকে নতুন দুই সেট
ড্রেসের পাশাপাশি একটি বোরকা বানিয়ে
দিয়েছি।
রামগড়
সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি
শিক্ষার্থী খন্দকার জুয়েল মাহমুদ বলেন, আমার পুরোনো স্কুল
ড্রেস মাপে হচ্ছে না,
ছোট হয়ে গেছে। এ
জন্য নতুন ড্রেস বানাতে
এসেছি।
এ
বিষয়ে আল আমিন বস্ত্র
বিতানের দরজি মোহাম্মদ আলাউদ্দীন
ও সাইফুল ইসলাম বলেন, স্কুল খুলে দেবে এমন
ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীরা
ড্রেস বানাতে ভিড় করছে। স্কুল
খোলার পরেও প্রতিদিন ২০-২৫টি করে ড্রেস
তৈরির অর্ডার আসছে। সে জন্য সময়মতো
ড্রেস ডেলিভারি দিতে একটু বিড়ম্বনা
পোহাতে হচ্ছে।
আল্লাহর
দান বস্ত্র বিতানের দরজি আব্দুর রহিম
এখনকার উপার্জন সম্পর্কে বলেন, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে
রাত ২টা পর্যন্ত কাজ
করতে হয়। ঈদ ব্যতীত
প্রতি বছর সাধারণত এত
ভিড় হয় না। বছরের
এই সময়টায় বাড়তি আয় করতে পেরে
ভালোই লাগছে।
কাপড়
দোকানি হরেন্দ্র শীল বলেন, আমার
দোকানে প্রতিবছরের থেকে কয়েকগুণ বেশি
ড্রেস তৈরি হচ্ছে। কাজের
প্রচণ্ড চাপ থাকায় প্রত্যন্ত
এলাকাগুলো থেকে ঘরোয়া দরজিদের
চুক্তিভিত্তিক নিয়ে এসেছি। তবুও
কুলিয়ে উঠতে পারছি না।
রামগড়
সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র
শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম জানান, মহামারি করোনার কারণে দেড় বছর স্কুল
বন্ধ ছিল। এতে শিক্ষার্থীরা
মানসিকভাবে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তবে এখন শিক্ষার্থীরা সবাই
স্কুলমুখী হতে যাচ্ছে। তাই
বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ড্রেস
পড়ে আসা বাধ্যতামূলক বলে
জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন পরিচ্ছন্ন শ্রেণিকক্ষে
নতুন ড্রেস পড়ে শিক্ষার্থীদের দেখে
মন ভরে যায়।