ফ্রিডম বাংলা নিউজ

মঙ্গলবার, নভেম্বর ৫, ২০২৪ |

EN

এডিসি লাবণী কনস্টেবল মাহমুদুলকে খুব স্নেহ করতেন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি | আপডেট: বৃহস্পতিবার, জুলাই ২১, ২০২২

এডিসি লাবণী কনস্টেবল মাহমুদুলকে খুব স্নেহ করতেন
মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনারের (এডিসি) খন্দকার লাবণী (৪০) ফাঁস নিয়ে এবং পুলিশের পোশাক পরা অবস্থায় কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান (২৩) নিজের কাছে থাকা শর্টগানের  গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন। দুটি ঘটনার যোগসূত্র নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। 

তবে নিহত মাহমুদুল হাসানের পরিবার ও স্বজনরা জানিয়েছেন তাদের মধ্যে ভাইবোনের মতো সম্পর্ক ছিল। পুলিশ কর্মকর্তা লাবণী কনস্টেবল মাহমুদুলকে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করতেন।

নিহত মাহমুদুল হাসান কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের পিপুলবাড়িয়া গ্রামের এজাজুল হকের ছেলে। কুষ্টিয়া শহরের দাদাপুর রোড়ের নতুন কমলাপুর এলাকায় করিম বক্স লেনে শুভেচ্ছা ভিলা নামের একটি দোতলা বাড়ি রয়েছে। প্রায় তিন বছর আগে মাহমুদুল পুলিশে যোগদান করেন। 

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মাগুরা পুলিশ লাইন্সের পুলিশ ব্যারাকের চার তলা ভবনের ছাদে আত্মহত্যা করেন কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান। 

অনেকেই মনে করছেন দুটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে। কারণ নিহত পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান দেড় মাস আগে খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এডিসি খন্দকার লাবণীর দেহরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মাত্র দেড় মাস আগে মাহমুদুল মাগুরায় বদলি হয়ে আসেন।

আত্মহত্যার কারণ জানতে চাইলে নিহত কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের বোন সুমাইরা খাতুন বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা লাবণীর সাথে আমার ভাইয়ের খুবই ভালো সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে ভাইবোনের মতো সম্পর্ক ছিল। পুলিশ কর্মকর্তা লাবণী আমার ভাইকে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করতেন। আমার ভাই খুব ভালো মানুষ ছিলেন। কখনো কোনদিন কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেনি সে। লাবণীর সাথে আমার ভাইয়ের খারাপ কোনো সম্পর্ক ছিল না।

মাহমুদুলের স্বজনরা জানার, ঈদের ছুটিতে ঈদের আগের দিন বাড়িতে এসেছিল এবং ঈদের পরেরদিন চলে গিয়েছিল মাগুরায়। পুলিশের কর্মকর্তার দেহরক্ষী ছিল মাহমুদুল। এডিসি লাবণী কনস্টেবল মাহমুদুলকে খুব স্নেহ করতেন। কেন আত্মহত্যা করল আমরা কেউই বুঝতে পারছিনা। শান্ত প্রকৃতির মানুষ ছিল মাহমুদুল। তার মৃত্যু আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। মাহমুদুলের বাবা এজাজুল হকও পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি করেন। চুয়াডাঙ্গায় তার পোস্টিং। 

এডিসি খন্দকার লাবণী মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ৬নং কাদিরপাড়া ইউনিয়নের বরালিদহ গ্রামের খন্দকার শফিকুল আজমের মেয়ে। তার স্বামী তারেক আবদুল্লাহ বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক। তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসে গতকাল বুধবার (২০ জুলাই) রাতে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

নিহত লাবণীর বাবা খন্দকার শফিকুল আজম জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে লাবণীর সঙ্গে তার স্বামীর কলহ চলে আসছিল। সংসারে আমার মেয়ে সুখী ছিল না। মূলত সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামীর সঙ্গে লাবণীর বনিবনা হচ্ছিল না। এ কারণেই আমার মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। 

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপরাধ ও প্রশাসন কামরুল হাসান বলেন, দুটি আত্মহত্যার ঘটনার মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা- সে বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত নই। তবে প্রাথমিকভাবে ঘটনা দুটি ভিন্ন ভিন্ন বলেই আমাদের কাছে মনে হচ্ছে। 

শ্রীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা খন্দকার লাবণীর আত্মহত্যার বিষয়ে এখনো কোনো পরিষ্কার কারণ আমরা জানতে পারিনি।