ফ্রিডম বাংলা নিউজ

মঙ্গলবার, নভেম্বর ৫, ২০২৪ |

EN

নির্মাণের দুই বছরেও চালু হয়নি শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টার

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: বুধবার, জুলাই ২০, ২০২২

নির্মাণের দুই বছরেও চালু হয়নি শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টার

ফাইল ছবি

অবকাঠামো নির্মাণের প্রায় দুই বছর পার হলেও চালু হয়নি সিরাজগঞ্জ শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টার। প্রয়োজনীয় যন্ত্র স্থাপনসহ নিয়োগ দেয়া হয়নি জনবল। যে কারণে দুর্ঘটনায় আহতরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পাশাপাশি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হারও বাড়ছে। 

কবে নাগাদ ট্রমা সেন্টারটি চালু হবে তা জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। যে কারণে প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টারটি অনেকটা অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে। 

যন্ত্রপাতি স্থাপন ও জনবল নিয়োগ দিয়ে শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টার দ্রুত চালুর দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম মহাসড়ক বরাবরই দুর্ঘটনাপ্রবণ। আর দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত ও  জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে  সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের মহাসড়কসংলগ্ন মুলিবাড়ীতে ২০১৮ সালে দেড় বিঘা জায়গার ওপর নির্মাণকাজ শুরু হয় শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টারের। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৭৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। বাস্তবায়ন করে সিরাজগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি)। 

২০২০ সালের ১ নভেম্বর নির্মাণকাজ শেষে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টার হস্তান্তর করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছে। কিন্তু প্রায় দুই বছরেও চালু হয়নি ট্রমা সেন্টারটি। আর কবে নাগাদ চালু হবে সেটাও সঠিকভাবে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। যে কারণে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ট্রমা সেন্টার নির্মাণ অনেকটা অর্থহীন হয়ে পড়েছে।

সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নবিদুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টার নির্মাণ বর্তমান সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ। এ মহাসড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনায় আহতদের  মহাসড়ক থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে জেলা সদর হাসপাতাল বা আশপাশের হাসপাতালে নিতে সময় নষ্ট হয়। অনেকে রক্তক্ষরণে মারা যান। কিন্তু আহতদের ট্রমা সেন্টারের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া গেলে অনেকে বেঁচে যেতে পারে। এতে করে মৃত্যুর হার অনেকটা কম হতে পারে। 

তিনি আরো বলেন, অনেক আগে নির্মাণকাজ শেষ হলেও শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টার  চালুর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কবে চালু হবে তাও অজানা। যে কারণে শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টার  নির্মাণ অনেকটা অর্থহীন হয়ে পড়েছে। তিনি সরকারের প্রতি শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টার দ্রুত চালুর দাবি জানান।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমই-এবি-জেভির স্বত্বাধিকারী রবিউল ইসলাম বলেন, প্রায় দুই বছর  হলো ভবন নির্মাণকাজ শেষে সংশ্লিষ্টদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু চালু না হওয়ায় ট্রমা সেন্টারটি আমার দুজন লোক দিয়ে পাহারা দিতে হচ্ছে। এজন্য আমার অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আল মোমেন বলেন, ভবন নির্মাণ শেষে প্রায় ২ বছর আগে স্বাস্থ্য বিভাগকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু ট্রমা সেন্টারটি চালু না হওয়ায় ভবন অবকাঠামো পাহারা দেয়ার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ করা হয়েছে। তারা সে থেকে লোক দিয়ে পাহানা দিচ্ছেন। তবে তারা আর পাহারা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ ট্রমা সেন্টারটি কবে নাগাদ চালু করবে তা আমাদের জানা নেই। বিষয়টি আমাদের জন্য বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা. রামপদ রায় বলেন,  যন্ত্রপাতি স্থাপন করে ও লোকবল নিয়োগ দিয়ে  আপাতত শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টারটি চালুর কোনো সুযোগ নেই। যার কারণে  প্রতিষ্ঠানটি এত দিনে চালু করা সম্ভব হয়নি। সরকার এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। এরই মধ্যে ট্রমা সেন্টারটি বিশেষ প্রকল্পের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে জনবল নিয়োগ দেয়াসহ সার্বিক কার্যক্রম শেষ করে শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টারটি চালুর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে সেটি কবে নাগাদ হবে তা সঠিক করে বলা যাচ্ছে না।