ফ্রিডম বাংলা নিউজ

সোমবার, জুন ১৭, ২০২৪ |

EN

বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ-আহত ১৯

হাফিজুর রহমান, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি | আপডেট: বুধবার, জুলাই ২০, ২০২২

বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ-আহত ১৯
ধনবাড়ীতে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ-আহত ১৯, থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৭, জামিনে মুক্তি

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে উপজেলা ও পৌর বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী ফকির মাহাবুব আনাম স্বপন ওরফে স্বপন ফকির গ্রুপ এবং মধুপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র একই আসনের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী সরকার সহিদুল ইসলাম ওরফে সরকার সহিদ গ্রুপের মাধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার (১৮ জুলাই) রাতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে স্বপন ফকির গ্রুপের ১০/১২ জনসহ উভয় গ্রুপের ১৯ জন আহত হয়েছে।
 
এ ঘটনায় ধনবাড়ী পৌর বিএনপির আহবায়ক এসএম সোবহান বাদি হয়ে সরকার সহিদ গ্রুপের বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন তালুকদার মিন্টুকে প্রধান আসামী এবং মধুপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র সরকার সহিদুল ইসলামসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা আরও ৬/৭ জনকে আসামী করে ধনবাড়ী থানায় মামলা করেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতেই প্রধান আসামী কামাল হোসেন তালুকদার মিন্টুসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পরে গতকাল মঙ্গলবার টাঙ্গাইল আদালত মামলার প্রধান আসামী সহ ৭ জন কেই জামিনে মুক্তি দেন।

পুলিশ ও উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক এম আজিজুর রহমান জানায়, আগামী ২২ জুলাই উপজেলা ও পৌর বিএপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনকে সফল করতে গত সোমবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এম আজিজুর রহমান ও পৌর বিএনপির আহবায়ক এসএম সোবহানের নেতৃত্বে স্বপন ফকির গ্রুপের নেতাকর্মীরা উপজেলা সদরে একটি মিছিল বের করে। এমন সময় পৌরশহরস্থ তেঁতুল তলায় প্রথম দফা দু-গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

পরে এসএম সোবহানের ধনবাড়ীস্থ ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি সভা হয়। সভা শেষে নেতাকর্মীরা বাড়ি ফেরার সময় সরকার শহীদ গ্রুপের কামাল হোসেন তালুকদার মিন্টুর  নেতৃত্বে এক দল দেশিয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে তাঁদের উপর হামলা চালায়। এ সময় স্বপন ফকির গ্রুপের পৌর বিএনপির আহবায়ক এসএম সোবহান, তাঁর ছেলে মো. সিব্বির সিমান্ত , ভাগ্নে আদিত্ব রহমান, ভগ্নিপতি বাবুল মিয়া এবং পাইস্কা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাবুল ওরফে ধলা বাবুলসহ ১০/১২ নেতাককর্মীসহ উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে গুরুতর ৭ জনকে উপজেলা স্বস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বাকিদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়।

এসময় সরকার সহিদ গ্রুপের জুলফিকার আলী সাজু, মেরাজ হোসেন, রুবেল হোসেন সহ অন্যরা আহত হন। এরা সহ বাকীরা বিভিন্ন  ক্লিনিকে চিকিৎসা নেয়।
ধনবাড়ী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এম আজিজুর রহমান বলেন, ‘সম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে সোমবার সন্ধ্যায় মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে পৌর বিএনপির আহবায়ক এসএম সোবহানের ধনবাড়ীস্থ ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আলোচনা শেষে  নেতাকর্মীরা বাড়ি ফোরার সময়  উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র সরকার শহিদের নির্দেশে ধনবাড়ী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ধোপাখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কামাল হোসেন তালুকদারের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমাদের পৌর বিএনপির আহবায়কসহ ১০/১২জন গুরুতর আহত হয়।

ধনবাড়ী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন তালুকদার মিন্টু জানান, স্বপন ফকিরের নির্দেশেই আমাদের বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের উপরে হামলা চালানো হয়। এতে আমাদের বিএনপির দলীয় নেতা জুলফিকার আলী সাজু, মেরাজ হোসেন, রুবেল হোসেন সহ ৭ জন ও আরো অনেকেই দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আহত করেন। স্বপন ফকির আমাদের বিএনপি’র দলীয় নেতাকর্মীদের নামে বার বার মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে মধুপুর ও ধনবাড়ী থানায়। এবং কী মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করান তিনি পরে গতকাল মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃত ৭ জন আসামীকেই আদালত জামিনে মুক্তি দেন। আমরা ধনবাড়ী ও মধুপুর ধনবাড়ীর বিএনপি’র নেতাকর্মীরা এই মিথ্যা মামলা ও হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

এ ব্যাপারে ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. চান মিয়া জানান, বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনয় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামীসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে গতকাল মঙ্গলবার টাঙ্গাইল আদালতে চালান দেয়া হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।