ঝিনাইদহে আশা এনজিও’র ম্যানেজারের জালিয়াতি ও প্রতারণা শিকার শৈলকুপা উপজেলার কচুয়া বাজার ব্রাঞ্চের লোন অফিসার (এলও) রুশিয়া খাতুন (৩২) হরিণাকুন্ডু অফিসের মধ্যে বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হরিণাকুন্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রোববার (১৭ জুলাই) দুপুরে ঝিনাইদহর হরিণাকুন্ডু উপজেলার আশা এনজিও অফিসে এই বিষপানের ঘটনা ঘটে।
বিষপানে অসুস্থ ও ভুক্তভোগী রুশিয়া খাতুন কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার মহেন্দ্ররপুর গ্রামের জুয়েল সর্দারের স্ত্রী। তিনি আশা এনজিওটির ঝিনাইদহ জেলার কচুয়া বাজার শাখায় লোন অফিসার (এলও) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এনজিও কর্মী রুশী খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আশা এনজিওর কচুয়া বাজার শাখা ব্রাঞ্চের ম্যানেজার হাসানুজ্জামান কৌশলে আমার গ্রাহকের কাছ থেকে আদায়কৃত ৪ লক্ষ ১১ হাজার টাকা ধার বাবদ গ্রহণ করে। গত ৬ জানুয়ারী ২০২২ তারিখে ম্যানেজার হাসানুজ্জামান বদলী হয়ে হরিণাকুন্ডু অফিসে চলে যায়। এমতাবস্থায় আমি ধারের টাকা ফেরত চাইলে সে সময় চাই কিন্তু কিছুদিন অতিবাহিত হলে ম্যানেজার আমার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এবিষয়ে শৈলকূপা থানায় আমি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
পরে রোববার আমি হরিণাকুন্ডু অফিসে ম্যানেজার হাসানুজ্জামানের কাছে চাইতে গেলে সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং হুমকি দেয়। তার ভাই ও ভাবী আশা এনজিওর হেড অফিসের বড় অফিসার। তাদের বলে আমাকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার হুমকি দেয়। এমতাবস্থায় আমি আর কোন কুল-কিনারা না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিই।
এবিষয়ে রুশিয়ার স্বামী জুয়েল সর্দার বলেন, আমার স্ত্রী খুব সহজ সরল মানুষ। ম্যানেজার হাসানুজ্জামান তাকে ফুসলিয়ে গ্রাহকদের কিস্তির টাকা ধার নিয়ে সেই টাকা অস্বীকৃতি জানানোর পর রোববার সকালে একটি লিখিত সুইসাইড নোট লিখে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।পরে লোক মারফতে জানতে পারি আমার স্ত্রী হরিণাকুন্ডু অফিসে অবস্থান করছে। সেখানি যেয়ে দেখি আমার স্ত্রী বিষপান করে মরন যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। আশংকাজনক অবস্থায় হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। আমি এঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আশরাফুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ম্যানেজার হাসানুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আশা এনজিওর কচুয়া বাজার ব্রাঞ্চের বর্তমান ম্যানেজার রোকনুজ্জামান বলেন, এই ঘটনার দায় পূর্বের ম্যানেজার কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না। ইতিমধ্যে আশার বিভাগীয় তদন্তে তার অনেক অসংগতি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই এই ঘটনার সুষ্ঠু নিরেপক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত।
এবিষয়ে শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তাছাড়া ভুক্তভোগী ওই এনজিও কর্মী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা বিষয় তদন্ত করে দেখছি। অপরাধীর বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।