ফ্রিডম বাংলা নিউজ

মঙ্গলবার, জুলাই ৯, ২০২৪ |

EN

মুক্তিযোদ্ধা সন্তানকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টা, মামলা নিচ্ছে না পুলিশ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি | আপডেট: বুধবার, জুলাই ৬, ২০২২

মুক্তিযোদ্ধা সন্তানকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টা, মামলা নিচ্ছে না পুলিশ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলা চালিয়ে মারপিট ও গলা কেটে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রওশন আলীকে (৪৫) হত্যার চেষ্টা করে। গুরুতর আহত করার ঘটনায় প্রভাবশালীদের চাপের মুখে ভুক্তভোগীর মামলা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গত রোববার (৩ জুলাই) সকালের দিকে কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সাঁওতা গ্রামের আমতলা বাজার এলাকায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে।

বুধবার (৬ জুলাই) সকাল ১০টায় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আজমত আলী শেখের একমাত্র ছেলে রওশন আলী। প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, বেকী, রামদা, হাত কুড়াল, ছ্যান, লোহার রড, কাঠের বাটাম ও বাঁশের লাঠি দিয়ে রওশন আলীকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে গুরুতর আহত করে।

এ ঘটনায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও তিন-চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে পরপর তিনদিন কুমারখালী থানায় লিখিত এজাহার জমা দিলেও পুলিশ তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেনি বলে অভিযোগ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার। বিষয়টি নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

অভিযুক্তরা হলেন- কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সাঁওতা গ্রামের মৃত মুনচুপ শেখের ছেলে সাইদুল ইসলাম ওরফে সাবদুল (৫৮), মৃত জোয়ার্দারের ছেলে কাশেম জোয়ার্দার (৫০), সাইদুল ইসলাম ওরফে সাবদুলের ছেলে খোকন ও শামিম, মৃত হেকমত আলীর ছেলে মোশারফ হোসেন ওরফে মছেন ও তুজাম, মৃত খেজমত আলীর ছেলে  বিপুল। 

মানববন্ধনে রওশন আলীর বাবা মুক্তিযোদ্ধা আজমত আলী শেখ বলেন, ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত থানায় মামলা রেকর্ড করেনি পুলিশ। ঘটনার দিন থেকে পরপর তিনদিন থানায় অভিযোগ দেয় হয়। কিন্তু অভিযোগটি এখনও মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি পুলিশ। তিনদিন থানায় ধরনা দিয়ে কোনো সমাধান হয়নি। প্রতিপক্ষের কাছে থেকে ঘুষ নিয়ে পুলিশ অভিযুক্ত আসামিদের পক্ষ নিয়েছে। পুলিশ মামলা না নিলে কুষ্টিয়া আদালতে মামলা করব আমরা। আমরা অপরাধীদের বিচার চাই।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে রওশনের উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। রওশনের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী গুরুতর আহত অবস্থায়  উদ্ধার করে প্রথমে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে চিকিৎসা দেয়। অবস্থা গুরুতর হলে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন সেখানে। পূর্ব-শত্রুতার জের ধরে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা ও মারপিট করা হয়েছে। থানায় এজাহার জমা দিলেও পুলিশ কোনো উদ্যোগ নেয়নি, মামলা নেয়নি। আমরা অপরাধীদের শাস্তি চাই। 

বাদী রওশনের স্ত্রী ফেরদৌসী খাতুনের অভিযোগ, মামলা নিয়ে নাটক করছে পুলিশ, তারা মামলা নিচ্ছে না। অভিযোগ দেয়ার তিনদিন অতিবাহিত হলেও মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি পুলিশ। প্রতিদিনই আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি থানায় গিয়ে। পুলিশ আসামিদের কাছে টাকা খেয়ে আমাদের সাথে অবিচার করছে। তাছাড়া আসামিরা প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দিচ্ছে, দেখে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমরা জান-মাল নিয়ে ভয়ে আছি। আমার স্বামীর গলায় ও মাথায় গুরুতর জখম হয়েছে। এছাড়া এলোপাতাড়ি মারপিট করে। প্রতিপক্ষের সাথে আমাদের পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে আমার স্বামীকে মারপিট করেছে। আমরা আসামিদের বিচার চাই। 

এবিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ওই ঘটনায় ভুল বা মিথ্যা অভিযোগে কেউ হয়রানি হোক তা আমি চাই না। তাই অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে। মামলা হবে।