শত জুলুম নির্যাতনের মধ্যেও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দলকে সামলে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
আজ সোমবার (৪ জুলাই) দুপুরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় দলের প্রধান এ কথা বলেন। কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির সময় আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীর ওপর অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে। জেল জুলুম হয়েছে। অনেক মানুষ মারা গেছে, অনেক লাশ হারিয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, এরশাদ, জিয়া সব আমলেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। কিন্তু শত নির্যাতনের মধ্যেও আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে সব সময় শক্তিশালী ছিল। বিশেষ করে আমাদের মাঠকর্মীরা সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তারাই কিন্তু দলকে ধরে রাখছেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুন্নত দক্ষিণ ও উত্তর অঞ্চলের অবস্থা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমি যখন দেশে ফিরে আসি, তখন সবচেয়ে অবহেলিত ছিল দক্ষিণাঞ্চল। উত্তরাঞ্চল ছিল মঙ্গা কবলিত এলাকা। তখন মানুষের (উত্তরাঞ্চল) গায়ে মাংস ছিল না। তাদের খাবার ছিল না। রোগের চিকিৎসা ছিল না। আর প্রতিবছর দুর্ভিক্ষ হতো। তখন থেকে আমার একটা প্রতিজ্ঞা ছিল, যখন সুযোগ পাব, তখন দেশের জন্য কাজ করব। এখন উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা নাই। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষেরও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।
এ সময় এমপি শেখ হেলাল উদ্দীন, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুলসহ টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া থেকে সড়ক পথে বিকেল ৩টা ২৮ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য।
এদিকে টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল জানান, টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যাহ্নভোজে ছিল ১০ পদের খাবার। এর মধ্য থেকে প্রধানমন্ত্রী ইলিশ মাছের পাতুরি খুব পছন্দ করে খেয়েছেন। এছাড়া লটকে মাছের শুঁটকি, চিংড়ি দিয়ে কচুর লতি ও চিংড়ি দিয়ে করলার তরকারি খেয়েছেন।
এর আগে পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সকাল ১১টা ২০ মিনিটে তিনি গোপালগঞ্জ সদরে পৌঁছান। দুপুর পৌঁনে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে পৌঁছে ফুল দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।