ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪ |

EN

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে সাড়ে ১৬ বস্তা টাকা!

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: শনিবার, জুলাই ২, ২০২২

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে সাড়ে ১৬ বস্তা টাকা!
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজি‌দের দানবাক্সে সাড়ে ১৬ বস্তা টাকা মিলেছে। এ ছাড়াও এসব দানবাক্সে রয়েছে সোনা-রুপার গহনাসহ বিপুল বৈদেশিক মুদ্রাও।। এখন চলছে টাকা গণনার কাজ।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসক জানান, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের উপস্থিতিতে লোহার দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এরপর প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় মেঝেতে সব টাকা ঢেলে গণনা শুরু করা হয়।

কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর পাড়ে অবস্থিত ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে নতুন তিনটিসহ মোট আটটি লোহার দানবাক্স রয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর এসব বাক্স খোলার রেওয়াজ রয়েছে।

শনিবার (০২ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এসব দানবাক্স খোলা হয়। বরাবরের মতোই এসব বাক্সে টাকার পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও রুপা মেলে।

এর আগে গত ১২ মার্চ দানবাক্স খোলা হয়। তখন ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

এরও আগে গত বছরের ৬ নভেম্বর এসব দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় ৩ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা। এছাড়া বিদেশি মুদ্রাসহ স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারও পাওয়া যায়।

জনশ্রুতি আছে, কোনো এক সময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝামাঝি প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী জায়গায় জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে। মুসলিম ও হিন্দু-নির্বিশেষে সব ধর্ম-বর্ণের লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। ওই পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পিরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী।

কিন্তু ওই সাধকের দেহাবসানের পর থেকে আশ্চর্যজনকভাবে এলাকায় স্থানীয় এমনকি দেশ-বিদেশের লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে। এ মসজিদে মানত কিংবা দান-খয়রাত করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সের হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মের নারী-পুরুষ মানত নিয়ে আসেন এই মসজিদে।

নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের ঢল নামে।

আগতদের মধ্যে মুসলিমদের অধিকাংশই জুমার নামাজ আদায় করেন এ মসজিদে। এ ইতিহাস প্রায় আড়াইশ বছরেরও অধিক সময়ের বলে জানা যায়।

বিপুল অর্থ-সম্পদ সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনায় রয়েছে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ২৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি। এ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসব অর্থ মসজিদ কমপ্লেক্স, মাদরাসা ও এতিমখানার উন্নয়নের পাশাপাশি অসহায়-দুস্থ, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষের সেবা এমনকি দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়।

পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্স ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. শামীম আলম বলেন, পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সকে ঘিরে এখানে একটি বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। এটি বাস্তবায়ন হলে মসজিদ কমপ্লেক্স আরও দৃষ্টিনন্দন হবে।