ফ্রিডম বাংলা নিউজ

সোমবার, জুন ১৭, ২০২৪ |

EN

আনারসের দাম কম, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: বৃহস্পতিবার, জুন ৩০, ২০২২

আনারসের দাম কম, দুশ্চিন্তায় চাষিরা
টাঙ্গাইলের মধুপুর গড় অঞ্চলে এবার আনারসের আবাদ বেড়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। তবে গত দুই বছরের তুলনায় এবার দাম অনেক কম। তাই আনারস নিয়ে চাষিরা দুশ্চিন্তায় আছেন।

সিলেট বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার কারণে আনারস যাচ্ছে না। এ ছাড়া গত দুই বছরের তুলনায় এবার করোনা সংক্রমণ কম। তাই আনারসের চাহিদা কমেছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা, আনারস ব্যবসায়ী ও আনারসচাষিরা।

মধুপুর উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, এবার উপজেলায় আনারসের চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৫৫ একর জমিতে, যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার ৭২৯ একর বেশি। গত দুই বছর করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশে আনারসের চাহিদা ছিল বেশি। কৃষকেরা ভালো দাম পেয়েছেন। তাই এবার বেশি জমিতে আনারস চাষ করেছেন চাষিরা। 

উপজেলা ছাড়াও গড় এলাকার ঘাটাইল; ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও মুক্তাগাছা এবং জামালপুর সদর উপজেলা এলাকায় আরও সাত হাজার একর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে। এসব আনারস মধুপুরের গারো বাজার ও জলছত্র পাইকারি হাটের মাধ্যমে বিপণন করা হয়। জুন মাসের শেষ দিকে আনারস উঠতে শুরু করে। চলে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত।

গতকাল বুধবার গারো বাজার হাটে সরেজমিন দেখা যায়, পাহাড়ি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার বাগান থেকে চাষি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সাইকেল, ভ্যানযোগে আনারস নিয়ে আসছেন পাইকারি হাটে। ব্যবসায়ীরা তাঁদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে ট্রাকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন।

আনারস বিক্রি করতে আসা মহিষমারা গ্রামের মনসুর আলী জানান, তিনি দুই একর জমিতে এবার চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু দাম অনেক কম। গত বছর যে আকারের আনারস প্রতিটি ১৮–২০ টাকায় বিক্রি করেছেন, এবার সেই আকারের আনারস বুধবার বিক্রি করলেন ১২ টাকায়। একই কথা জানালেন অপর চাষি নাজমুল হোসেন। তিনি যে আকারের আনারস গত বছর ৩৫ টাকায় বিক্রি করেছেন, এবার তা বিক্রি করলেন ২৩ টাকায়।

মধুপুরের আনারসচাষি ছানোয়ার হোসেন জানান, প্রতি একরে শুধু গারো বাজার হাট থেকেই মৌসুমের সময় প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক আনারস দেশের বিভিন্ন স্থানে যেত। এ ছাড়া আশপাশের এলাকায় সিএনজিচালিত, ব্যাটারিচালিত শতাধিক অটোরিকশায় আনারস পাঠানো হতো। এবার চাহিদা কম রয়েছে। তিনি জানান, বন্যা না হলে শুধু সিলেট অঞ্চলেই প্রতিদিন ১০–১২ ট্রাক আনারস যেত।

আনারসচাষি শামছুল হক বলেন, এই দামে আনারস বিক্রি করলে চাষিদের কাঙ্ক্ষিত মুনাফা আসবে না। তাই তাঁরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

আনারসের পাইকারি ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন জানান, এ বছর তিনি মাত্র এক ট্রাক আনারস সিলেটে পাঠিয়েছেন। এখন সেখানে বন্যার কারণে চাহিদা নেই। তাই সেখানে আনারস যাচ্ছে না। সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দাম একটু উঠতে পারে বলে তিনি আশা করছেন।

মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল জানান, গত দুই বছর করোনাকালে জ্বর ও ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে মানুষ বেশি আনারস খেয়েছেন। তাই দাম ছিল বেশি। সে তুলনায় এবার করোনা পরিস্থিতি ভালো থাকায় আনারসের চাহিদা কমেছে। তবে এবার দাম কম হওয়ায় মুনাফা কিছুটা কম হবে। তবে কৃষকেরা আনারস বিক্রি করে লোকসানে পড়বেন না বলে তিনি মনে করেন।